<<90000000>> দর্শক
<<266>> উদ্যোক্তা 18টি দেশে
<<4647>> টি কৃষিবাস্তুবিদ্যা ভিডিও
<<107>> ভাষা উপলব্ধ

নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়ো

Author
Paul Van Mele
Coconut coir dust
Coconut coir dust
Coconut coir dust
Coconut coir dust
Coconut coir dust

অনেক বছর আগে আমি আমার প্রথম দিকের রচনাগুলোর মধ্যে ‘কোকোনাট কোয়ার ডাস্ট মাল্চ ইন দি ট্রপিক্স’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লিখেছিলাম। নিবন্ধটি বেলজিয়ামের অলাভজনক সংস্থা ‘কমিটি জেন পেইন’-এর ত্রিভাষিক (ডাচ, ফরাসি ও ইংরেজি) ‘হিউমাস নিউজ’-এ প্রকাশিত হয়েছিল। নিবন্ধটি পড়ে সারাবিশ্বের মানুষ কম্পোস্ট তৈরি শিখেছিল সেই ১৯৭৮ সাল থেকে। 

 

কয়েক বছর আগে আমাদের ভারতীয় ভিডিও অংশীদারদের মধ্যে একজন যখন নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়ো দিয়ে কম্পোস্ট তৈরির বিষয়ে একটি ভিডিও নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তখন আমি আমার পুরনো নিবন্ধটি খুলে পড়েছিলাম এবং এতে এখনও অনেক দরকারি তথ্য রয়েছে দেখে একইসাথে আনন্দিত ও অবাক হয়েছি।

 

নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়ো বা কয়ার পিথ হলো এমন এক উপাদান যা নারকেলের ছোবড়ার তন্তুগুলো আলাদা করে ফেললে যে গুঁড়োগুলো থাকে সেগুলো। নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়ো দিয়ে কী করা যায় সে সম্পর্কে নারকেলের কারখানাগুলোর লোকেদের ধারনাই নেই, তাই আর্দ্র গ্রীষ্মম-লীয় অঞ্চলের অনেক উপকূলীয় এলাকায় এই প্রাকৃতিক সম্পদের স্তূপ দেখা যায়। আলোচ্য নিবন্ধে আমরা নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়োকে ‘কয়ার ডাস্ট’ নামে অবহিত করব। 

 

অর্থনৈতিক বা ইকোলজিক্যাল কারণগুলো যতই চালিকা শক্তি হোক না কেন, গ্রীষ্মম-লীয় অঞ্চলে স্বল্প বাহ্যিক ইনপুট কৃষিব্যবস্থায়, কৃষকেরা প্রায়ই মাটি সংরক্ষণ এবং টেকসই জমি ব্যবহারে জৈববর্জ্য প্রয়োগ করেন।

 

যদিও কয়ার ডাস্টে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম খুবই সামান্য পরিমাণে থাকে তবুও এটি পুষ্টির নগণ্য উৎস হিসেবে কাজ করে। ভেজা অবস্থায় এটি শুকনো অবস্থার চেয়ে আট গুণ ভারি হয়ে থাকে। শ্রীলঙ্কায় নারকেলের চারার চার পাশে ১৫ সেন্টিমিটার পুরো কয়ার ডাস্টের মাল্চ প্রয়োগ করে, এতে সেচের চাহিদা শতকরা ৫৫ ভাগ পর্যন্ত কমে আসে।

 

 

কয়ার ডাস্ট বিষয়ে আমার লেখা নিবন্ধ (কয়ার পেপার) থেকে জানা যায়, শুষ্ক মৌসুমে নারকেল-আনারস আন্তঃফসলের চাষে মাটির উপরের অংশে মাল্চের নিচে আর্দ্রতা শতকরা ৪৯ ভাগ ছিল এবং এর তুলনায় সমান উচ্চতার বালুকাময় শিলার নিচের অংশে ছিল শতকরা ১০ ভাগ। 

 

যখন লবণ-সংবেদনশীল গাছগুলোতে কয়ার ডাস্টের মাল্চ প্রয়োগ করা হয় তখন খেয়াল রাখতে হবে যাতে লবণের ঘনত্ব বশি না হয়। কয়ার ডাস্টে সর্বোচ্চ লবণের ঘনত্ব উপকূলীয় অঞ্চলের তাজা নারকেল গাছে দেখা যায়। নারকেলের বাগানে বা নার্সারিতে মাল্চ প্রয়োগের আগে উপদানগুলো বৃষ্টিতে রেখে লবণের পরিমাণ কমানো যায়। 

 

কেনিয়ার একটি বাণিজ্যিক নার্সারিতে কাজু বাদামের বীজতলায় কয়ার ডাস্ট প্রয়োগ করে মাটি উন্নত করা হয়। এছাড়াও এর প্রয়োগের ফলে চারাগাছ তুলে নিয়ে অন্য জায়গায় রোপণের সময় শেকড় নষ্ট হয় না, এই জন্য কয়ার ডাস্টকে ধন্যবাদ দেওয়া যায়। ভারতে কাজু বাদাম ক্ষেতে গাছের চারপাশে ১.৫ মিটার ব্যাসার্ধে ৭.৫ সেন্টিমিটার মাল্চ প্রয়োগ করে আগাছা দমন করা হয়। শ্রীলঙ্কায় প্রধানত আনারস ও আদার মতো আধা-বহুবর্ষজীবী ফসলের ক্ষেতে এ ধরনের মাল্চ প্রয়োগ করা হয়। কয়ার ডাস্টের মাল্চ পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ কিছু আগাছা দমন করেছে। 

 

আগাছা দমনের পাশাপাশি কয়ার ডাস্টের মাল্চ আচ্ছাদিত ফসলের চাষে সহযোগিতা করে। শ্রীলঙ্কায় নারকেল বাগানে গুল্মজাতীয় শিমগুলো আচ্ছাদিত ফসল হিসেবে চাষ করা কর। তবে, শুষ্ক মৌসুমে সেগুলো আগাছার যন্ত্রণায় পড়ে। কয়ার ডাস্ট ব্যবহার করে আগাছা দমন করা হয়। তবে শুষ্ক মৌসুমে শিমজাতীয় আচ্ছাদিত গাছগুলো আনুকূল্য পেয়ে থাকে। 

 

কয়ার ডাস্ট প্রধানত লিগনিন দিয়ে গঠিত। এটি একটি কাঠের পদার্থ, যা খারাপভাবে জীবাণুবিয়োজক। শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ জৈব-পদার্থ এবং সি/এন অনুপাত অত্যন্ত উচ্চ (>১৩০)। ৪.৫-৫.৫ এর নিম্নে পিএইচ জীবাণুবিয়োজনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত সুরক্ষা প্রদান করে। কেননা, পিএইচ ৪-এর নিচে নেমে গেলে অনেক অণুজীব বেঁচে থাকে না। 

 

জৈব-মাল্চের ধীরগতির জীবাণুবিয়োজন ইদানীং আরও বেশি পরিমাণে দেখা যাচ্ছে, বিশেষ করে আদ্র ও উপ-আদ্র গ্রীষ্মম-লীয় অঞ্চলে, যেখানে জৈব-পদার্থের দ্রুত খনিজকরণ এবং খনিজপদার্থের লিচিং বড়ো ধরনের সমস্যা হয়ে দেখা দেয়। 

 

যদিও কয়ার ডাস্ট সহজেই মাল্চ হিসেবে প্রয়োগ করা যেতে পারে, তবে সম্প্রতি নির্মিত অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের ভিডিও-তে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, যখন কেউ মাটির গঠন উন্নত করতে এটি ব্যবহার করতে চান তখন কয়ার ডাস্ট কম্পোস্ট করে নেওয়া উত্তম। 

 

কয়ার ডাস্ট আগাছা নিয়ন্ত্রণ, মাটির ভৌত অবস্থার উন্নতি এবং জল ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটিকে মাটি সংরক্ষণ এবং সমন্বিত ফসল পদ্ধতিতে টেকসই জমি ব্যবহারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত, এবং অবশ্যই বর্জ্য হিসেবে ভাবা উচিত নয়। 

 

গ্রীষ্মম-লীয় অঞ্চলে কয়ার ডাস্টের ব্যবহার শুধু জ্ঞানের অভাবে বাধাগ্রস্ত হয় না, যা অ্যাকসেস এগ্রিকালচার ভিডিও শেয়ার করার লক্ষ্য রাখে। তবে, কয়ার ডাস্ট গুরুতরভাবে হুমকির সম্মুখীন। কেননা, কয়ার ডাস্ট ইয়োরপের দেশগুলোতে ক্রমবর্ধমানহারে রপ্তানি হচ্ছে, সেখানে এগুলো উদ্যানপালনের স্তর হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

 

 

আরও পড়ার জন্য

Van Mele, P. 1997. Utilization of Coconut Coir Dust Mulch in the Tropics. Humus News, 13(1), p. 3-4.

 

এক্সেস এগ্রিকালচার থেকে সম্পর্কিত ভিডিও

Coir pith – from waste to wealth

 

© Copyright Agro-Insight

আপনি কিভাবে সাহায্য করতে পারেন.. আপনার উদার সাহায্য আমাদের ক্ষুদ্র কৃষকদের কৃষি পরামর্শের জন্য তাদের ভাষায় আরও ভালভাবে পৌঁছাতে সক্ষম করবে।.

Latest News

অ্যাকসেস এগ্রিকালচার ‘গ্যানডিংগ্যান অ্যাওয়াডর্’ অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সিটি অব দি ফিলিপাইস কমিউনটি ব্রডকাস্টার্স-এর অংশীদার হয়েছে

অ্যাকসেস এগ্রিকালচার ১৮তম গ্যানডিংগ্যান অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ অনুষ্ঠানটি স্পন্সর করে। ৪ মে ২০২৪ এটি অনুষ্ঠিত হয় লস বানোসে। লস বানোসে ইউনিভর্সিটি অব ফিলিপাইনস-এর কলেজ অব ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন-এর ফিলিপাইন কমিউনিটি ব্রডকাস্টার্স অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। এর থিম ছিল এগ্রিকালচার : স্টোরিজ অব চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড হোপ

ভারতের মধ্য প্রদেশে গ্রামীণ তরুণদের মধ্যে ডিজিটাল কৃষিশিল্পোদ্যাগের সংস্কৃতি গড়ে তোলা

গ্রামীণ এলাকায় প্রাকৃতিক কৃষি সহজলোভ্য করার জন্য সদ্য শেষ হওয়া একটি স্মার্ট প্রজেক্টর প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মধ্যদিয়ে ভারতের মধ্য প্রদেশের পাঁচটি নতুন

উগান্ডায় গ্রামীণ উপদেষ্টা পরিষেবা সঞ্চালকেদের ডিজিটাল দক্ষতা বাড়ানোর কর্মশালা অনুষ্ঠিত

উগান্ডার বুইকওয়ে, বুগিরি, সেমবাবুলে, লিরা ও সোরোতিÑ এই পাঁচটি জেলার প্রায় ৩০ জন রুরাল অ্যাডভাইজারি সার্ভিস (আরএএস)-এর সঞ্চালকদের একটি অরিয়েনটেশন কর্মশালায় অংশ নেন। কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয় ১৫ এপ্রিল থেকে ১৭ মে ২০২৪ তারিখে। এতে প্রকল্প সম্পাদনের সময় রুরাল অ্যাডভাইজারি সার্ভিস সঞ্চালকেদের ডিজিটাল দক্ষতা বাড়ানোর জন্য অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের সম্পদ ও সরঞ্জামের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।

মাদাগাস্কারে মাস্টার প্রশিক্ষকগণের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

মাদাগাস্কারে ‘গ্লোবাল প্রোগ্রাম ফর স্মল-স্কেল এগ্রোইকোলজি প্রোডিউসার্স অ্যান্ড সাসটেইনেবল ফুড সিস্টেম ট্রান্সফরমেশন’ (জিপি-এসএইপি) প্রকল্পের

আমাদের স্পনসরদের ধন্যবাদ