


আমি বলিভিয়ার একজন তরুণ সাংবাদিক এডসন রড্রিগজের সাথে দেখা করি, তিনি কোচাবাম্বার ইউনিভার্সিটির (ইউএমএসএস) টেলিভিশন চ্যানেলে ‘টিভিউ’ কর্মসূচিতে পরিবেশ নিয়ে কাজ করেন। তিনি গ্রানিজো ব্লাঙ্কো (সাদা শিলাবৃষ্টি) নামে একটি অনুষ্ঠান নির্মাণে সহযোগিতা করেন, এটি আন্দিজের এই অংশে একটি নাটকীয় নাম, যেখানে শিলাবৃষ্টি মুহূর্তের মধ্যে ফসল নষ্ট করতে পারে। শোটি শুধু কৃষিকাজ নয়, সমস্ত পরিবেশগত বিষয়ই উপস্থাপন করে থাকে।
এডসন এটা জেনে অবাক হয়েছিলেন যে, অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের কিছু ভিডিও টিভি অনুষ্ঠানের জন্য উপযুক্ত হতে পারে। কয়েকটি ভিডিও দেখার পর তিনি কেঁচো দিয়ে কম্পোস্ট তৈরির একটি ভিডিও ডাউনলোড করেন। ভিডিওটি ভারতে ধারণ করা হয়েছিল, এবং এটি সম্প্রতি স্প্যানিশ ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে, ভিডিওগুলো আরও ব্যাপকভাবে যেন পাওয়া যায় তা অতি গুরুত্বপূর্ণ। স্প্যানিশ ভাষা ছাড়া কোচাবাম্বাতে মহারাষ্ট্রের একটি ভিডিও দেখানোর কথা বিবেচনা করা যায় না। দুটি স্থান অবস্থানগতভাবে অনেক দূরে ; তবে, স্থান দুটির মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। প্রথমত, উভয়েরই জলবায়ু আধা-শুষ্ক এবং দ্বিতীয়ত, ছোটো খামারগুলো ফসলের অবশিষ্টাংশ এবং অন্যান্য জৈব-বর্জ্য দিয়ে কম্পোস্ট তৈরি করে।
এডসন আমাকে গ্রানিজো ব্লাঙ্কোর একটি পর্বে অংশগ্রহণ করতে বলেছিলেন, যাতে একটি সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারের পরে কম্পোস্ট এবং কেঁচোর ভিডিও প্রদর্শন করা হয়েছিল। তিনি জানতে আগ্রহী ছিলেন, কেন অ্যাকসেস এগ্রিকালচার একটি দেশের ভিডিও অন্য দেশে ক্ষুদ্র খামারিদের দেখানোর জন্য প্রচার করে। আমি বলেছিলাম যে, কৃষকদের গায়ের রং, পোশাক এবং চুলের ধরন আলাদা হতে পারে, তবে তারা একই সমস্যা নিয়ে কাজ করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বিশ^ব্যাপী কৃষকেরা আফলাটক্সিনের মাধ্যমে দূষিত ফসল নিয়ে সংগ্রাম করছে, চিনাবাদাম ও ভুট্টার মতো শস্যগুলো ঠিকভাবে না-শুকানোর ফলে সেগুলো ছত্রাকের মাধ্যমে বিষাক্ত হয়ে পড়ে।
আমি এডসনকে বলেছিলাম যে, বলিভিয়ায় চিত্রায়িত কৃষক-শিখন ভিডিওগুলো অন্য কোথাও প্রদর্শিত হচ্ছে। আমি এবং আমার সহকর্মীরা মিলে চিনাবাদামে আফলাটক্সিন ব্যবস্থাপনার ওপর একটি ভিডিও স্প্যানিশ ভাষায় নির্মাণ করেছি, কিন্তু তারপর সেটি ইংরেজি, ফরাসি এবং আফ্রিকান ও ভারতীয় বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। এই একই আফলাটক্সিন বলিভিয়া এবং বুরকিনা ফাসোতেও দেখা যায়, তাই দক্ষিণ আমেরিকার কৃষকদের অভিজ্ঞতা থেকে আফ্রিকান কৃষকেরা উপকৃত হতে পারেন। এই ক্ষেত্রে বলিভিয়ার বিজ্ঞানী এবং চুকুইসাকার কৃষকেরা ফসল শুকানোর এবং সংরক্ষণের উন্নত কৌশলগুলো প্রয়োগ করে খাবারে আফলাটক্সিন কমানোর সহজ উপায়গুলো ভিডিওতে দেখায়।
এডসন আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “বলিভিয়ান কৃষকেরা তাদের অন্যান্য দেশের সহকর্মীদের কাছ থেকে অন্য কোন ধরনের বিষয়ে শিখতে পারে?” কেননা, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, ভালো বিষয়গুলো উভয় দিকেই প্রবাহিত হতে পারে। আমি ব্যাখ্যা করে বলেছিলাম যে, বলিভিয়ার কিছু অংশে এবং পৃথিবীর অন্যত্র মাটির উর্বরতা একটি সমস্যা; অ্যাকসেস এগ্রিকালচারে কাভার ফসল, কম্পোস্ট, সংরক্ষণমূলক কৃষি এবং মাটি উন্নত করার আরও অনেক উপায়ের ভিডিও রয়েছে, গ্রানিজো ব্লাঙ্কোর মতো অনুষ্ঠানে প্রদর্শনের জন্য সব ভিডিওই বিনামূল্যে পাওয়া যায়।
অনেক বয়স্ক মানুষ, বিশেষত যারা সরকারের হয়ে কাজ করেন, তারা মনে করেন যে, প্রতিটি দেশে ভিডিও তৈরি করতে হবে এবং এক দেশের ভিডিও অন্য দেশে প্রদর্শন করা যাবে না। এমন সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি সামান্যই ধারণা সৃষ্টি করতে পারে। এই সরকারি কর্মীরা তাদের নিজস্ব সামান্য ধারণা শেয়ার করার জন্য এক দেশ থেকে অন্য দেশে গিয়ে আনন্দের সাথে কৃষি এবং অন্যান্য অনেক বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করেন এবং অংশগ্রহণ করেন। যদি সরকারি কর্মীরা বিদেশি সহকর্মীদের কাছ থেকে ইনসাইট অর্জন করতে পারেন, তাহলে কৃষকদেরও তা পারা উচিত।
সৌভাগ্যবশত এডসনের মতো তরুণেরা গণমাধ্যমের গুরুত্ব বুঝতে পারেন। যেমন, শিখন ভিডিওগুলো, যা কৃষকদের জ্ঞান শেয়ার করতে এবং আন্তঃদেশীয় সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সক্ষম করে তোলে। যতক্ষণ পর্যন্ত ক্ষুদ্র কৃষকেরা বুঝতে পারেন এমন কোনো ভাষায় ভিডিওগুলোর অনুবাদ করা না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা ধারণা বিনিময় করতে এবং ভিডিও থেকে অনুপ্রেরণা পেতে পারেন না। একটি ভিডিও নির্মাণের চেয়ে অনুবাদে খরচ অনেক কম পড়ে।
সম্পর্কিত ভিডিওসমূহ
বাদামের আফলাটক্সিন ব্যবস্থাপনা