অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের দশম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে অতিথি লেখকের নিবেদিত ব্লগ
ঐতিহ্যগতভাবে, কৃষি-সহায়ক পরিষেবাগুলো অপর্যাপ্ত। কৃষিকাজের ক্ষেত্রে বড়ো এই চ্যালেঞ্জ পৃথিবীর বেশিরভাগ অংশে অতীতে যেমন ছিল, বর্তমানেও তেমনি আছে।
সক্ষমতা উন্নয়ন এবং মানসম্পন্ন কৃষক-থেকে-কৃষক প্রশিক্ষণ ভিডিও-র দক্ষিণ-দক্ষিণ বিনিময়ের মাধ্যমে এগ্রোইকোলজিক্যাল নীতিসমূহ ও গ্রামীণ উদ্যোগের প্রচার করার মাধ্যমে অ্যাকসেস এগ্রিকালচার ২০১২ সাল থেকে এই পর্যন্ত ৯ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছেছে এবং বিশ্বব্যাপী আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।
অ্যাকসেস এগ্রিকালচার স্থানীয় ভাষায় কৃষক প্রশিক্ষণ ভিডিওগুলো প্রদর্শন ও প্রচার করার পাশাপাশি টেকসই খাদ্য ব্যবস্থার পক্ষে সমর্থন করে। ফলে কৃষকদের জীবন-যাত্রার মান উন্নত হচ্ছে।
চলতি বছরটি অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের জন্য বিশেষ একটি বছর। কেননা, এ বছর সংস্থাটি মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ ভিডিওর মাধ্যমে সারাবিশে^র কৃষকদের সহায়তা করার দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করছে।
অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের সাথে আমার কাজের অভিজ্ঞতা শুরু হয়েছিল, যখন আমাকে উগান্ডায় অ্যাকসেস এগ্রিকালচার অ্যাম্বাসেডর হিসেবে সম্মানসূচক পদ দেওয়া হয়েছিল। তৃণমূল পর্যায়ের কৃষকদের সাথে কাজ করা একজন পেশাদার কৃষি বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমার দায়িত্বের শীর্ষে এটিকে স্থান দিয়েছিলাম।
অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের সাথে আমার সংযুক্তি জাদুকরি, তথ্যপূর্ণ এবং কখনও কখনও একই রকমভাবে চ্যালেঞ্জিং-ও। এটা জানাতে পেরে আমি বিশেষভাবে আনন্দিত যে, অ্যাকসেস এগ্রিকালচার তার ভিডিও প্ল্যাটফর্ম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার, ফেসবুক, লিঙ্কডইন চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে কৃষিবিষয়ক তথ্য প্রদান এবং প্রবেশাধিকার উন্নত করতে শুরু করার পর আমি নিচের বিষয়গুলো লক্ষ্য করেছি:
- আমি যে জনগোষ্ঠীর সাথে কাজ করি, সেখানে তরুণ তরুণীরা কৃষিকাজ করতে বেশ আগ্রহী, অথচ আগে এই ধরনের উদ্যোগকে একজন বৃদ্ধের কাজ বলে মনে করা হতো।
- অ্যাকসেস এগ্রিকালচার মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করে কৃষিজ্ঞান লাভ করা কতটা সহজ হয়ে উঠেছে তা দেখে কৃষক ও ভবিষ্যতের কৃষকেরা খুবই বিস্মিত। এই জ্ঞান এখন তাদের নখদর্পণে। তাদের আরও কৃষক প্রশিক্ষণ ভিডিও পাওয়ার ইচ্ছেও পূরণ হচ্ছে।
- প্রশিক্ষণ ভিডিওগুলো টেকসই কৃষিচর্চার জ্ঞান আরও দক্ষতার সাথে ও কার্যকরভাবে কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেয়। কেননা, ভিডিওগুলো ইতোমধ্যেই তাদের মাতৃভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।
- অ্যাকসেস এগ্রিকালচার ফ্ল্যাটফর্মকে কৃষকেরা ক্রমবর্ধমানহারে তাদের আগ্রহের যেকোনো কৃষি উদ্যোগের জন্য রেফারেন্স পয়েন্ট (তথ্যোল্লেখসূত্র) হিসেবে ব্যবহার করছে।
- টেকসই কৃষির নতুন প্রবণতাগুলো সম্পর্কে ব্যক্তিগত এবং কৃষকদের সচেতনতা বাড়ছে।
- প্রশিক্ষণ ভিডিওগুলো কৃষকদের দক্ষতা ও জ্ঞান উন্নত করছে এবং চাষাবাদ পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে তাদের অনুপ্রাণিত করছে।
যাই হোক, অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের সাথে আমার এই যাত্রার কিছু চ্যালেঞ্জ-ও রয়েছে। আর সেগুলো হলো: আমার দেশে খুবই কমসংখ্যক কৃষক আছে, যারা ইলেট্রনিক ডিভাইস যেমন, মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট - এইসব কিনতে পারে এবং যার সাহায্যে তারা অ্যাকসেস এগ্রিকালচার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারে। ইন্টারনেটের উচ্চ শুল্কের দরুন এটি আরও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
দেশের নানাপ্রান্তে কৃষকদের প্রষিক্ষণ ভিডিও দেখানোর জন্য আমার কাছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নেই। বেশিরভাগ সময় আমি আমার ব্যক্তিগত ল্যাপটপটিকে ভিডিও দেখানোর উপযোগী করে নিই। কিন্তু এতে কৃষকদের চাহিদা পূরণ হয় না। একবার আমি একটি ভালো প্রজেক্টর পেলে প্রত্যন্ত এলাকায় যেখানে মোবাইল ডিভাইস এবং ইন্টারনেট সংযোগের অভাব রয়েছে সেসব জায়গায় কৃষকদের জন্য এটি খুব উপকারে লাগবে।
এ বছর আমি অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে বিশ্বের বাকি অংশের সাথে যোগ দিচ্ছি, আমি সারাবিশে^র কৃষক জনগাষ্ঠীকে উন্নত জীবন ও জীবিকার জন্য অ্যাকসেস এগ্রিকালচার প্রশিক্ষণ ভিডিওগুলো গ্রহণ করতে অনুরোধ করছি, জিএমও-কে ‘না’ বলুন, এবং টেকসই কৃষি পদ্ধতি গ্রহণ করুন। আমি অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের প্রতি অবিরাম সমর্থন ব্যক্ত করছি এবং অনুগত থাকার অঙ্গীকার করছি।