<<90000000>> দর্শক
<<266>> উদ্যোক্তা 18টি দেশে
<<4647>> টি কৃষিবাস্তুবিদ্যা ভিডিও
<<107>> ভাষা উপলব্ধ

প্রকৃতির জন্য ভালোবাসা

Author
Paul Van Mele
A love for nature
A love for nature

যখন আপনি পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের কাছে জানতে চান যে, তারা বড়ো হয়ে কী হতে চায়, তখন অনেকেই জবাব দেয় পশুচিকিৎসক, পাইলট, ফুটবল খেলোয়াড়, ব্যালেরিয়ান (একধরনের নৃত্যশিল্পী), ফায়ার ফাইটার (অগ্নিনির্বাপক), আপনি বিশে^র কোন অঞ্চলের শিশুদের প্রশ্নটি করছেন, তার ওপর নির্ভর করে উত্তর কী হবে । সৌভাগ্যবশত, কেউ কেউ বলে যে, তারা কৃষক হতে চায়। সম্প্রতি আমার ভারত সফরকালে একজন তরুণ বাবা আমাকে তার অনুপ্রেরণামূলক গল্প বলেছিলেন।

নরেশ এন. কে একটি ট্রান্স-ডিসিপ্লিনারি স্বাস্থ্যবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় ‘ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’তে (টিডিইউ) উর্ধ্বতন প্রশাসন সহকারী হিসেবে কাজ করেন, যা আমি এর আগে কোনো বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ে দেখিনি। টিডিইউ প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদিক জ্ঞানকে সবচেয়ে ভালোভাবে বুঝতে এবং মানুষ ও প্রাণীর স্বাস্থ্যের অনুশীলন, পণ্য ও নীতির সাথে একীভূত করতে এথনোবোটানি-জাতীয় আধুনিক বিজ্ঞান, খাদ্য প্রযুক্তি, চিকিৎসা এবং পশুচিকিৎসা বিজ্ঞান ব্যবহার করে।   

টিডিইউ-এর সাথে সহযোগিতামূলক কাজের কারণে নরেশ অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের সাথে যুক্ত, সেখানে আমরা কৃষকদের জ্ঞান ও অনুশীলনের উপর স্থানীয় কন্নড় ভাষায় অনুবাদ করা গাভী পালন বিষয়ে আমাদের কিছু ভিডিও-র প্রভাব এবং এটি কীভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে গবাদিপশু পালনে সহযোগিতা করে এবং দুধে অ্যান্টিবায়োটিকের পরিমাণ কমিয়ে আনে তা মূল্যায়ন করি। যখন আমরা নরেশের সাথে দেখা করি, তখন তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভিডিও সম্পর্কে তার আগের অভিজ্ঞতা বলতে শুরু করেছিলেন। 

“কোভিডের সময়ে বাজারে খাবারের মূল্য বেড়ে গিয়েছিল এবং আমরা জানতাম না ফসলে কীধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছিল। যদিও আমি কুড়ি বছর আগে শহরে চলে এসেছি, তবুও যেহেতু আমার শরীরের শিরা-উপশিরায় কৃষকের রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে, আমি ইউটিউবে বিষয়গুলো খুঁজতে শুরু করি এবং আমার ছাদে হাঁড়িতে জৈবফসল ফলাতে শুরু করি। যখনই আমার পরামর্শের দরকার হতো, আমি কৃষকদের আমার বাড়িতেও ডেকে আনতাম। তারা আমাকে সবসময় প্রয়োজনীয় টিপস দিয়েছিল।”     

লাল মাটি দিয়ে বালতি ভরাট করে, এবং নারকেলের ছোবা আর বাড়িতে তৈরি করা ভার্মিকম্পোস্ট একত্রে মিশিয়ে নরেশ তার ছাদে গাছপালা জন্মানোর জন্য স্বাস্থ্যকর, সমৃদ্ধ মাটি তৈরি করেছিলেন। তার মোবাইল ফোনে তুলে রাখা ছবিগুলো ফ্লিক করে তিনি একের পর এক আশ্চর্যজনক, সমৃদ্ধ ফসলের ছবিগুলো দেখাতে থাকেন : টমেটো, শিম, বরবটি, চিচিংগা, ঝিঙ্গা, করল্লা, মিষ্টি আলু, প্যাশন ফল এমন কি আঙ্গুরের ছবিও ছিল।

নরেশ বলতে থাকেন, “আরেকটি কারণ ছিল, আমি একটি ছাদবাগান স্থাপন করতে চেয়েছিলাম, কোভিডের সময় স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তাই আমি আমার চার বছরের ছেলেকে ব্যস্ত রাখার জন্য বাড়িতে কিছু একটা করতে চেয়েছিলাম। কেননা, ওই সময়ে অনেক শিশুই ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভি দেখে কাটিয়ে দিত। আমাদের ছাদবাগান স্থাপিত হওয়ার পর ঋষিক প্রায়ই আমার হাত ধরে টানত আর বলত, “এসো বাবা, চলো গাছে জল দিই।”

যখন আমি নরেশকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, ছাদবাগানের কোন দিকগুলো তার ছেলে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে, তখন তিনি চোখের পাতা না ফেলে বলেন, “পাখি, মৌমাছি এবং অন্যান্য পোকামাকড়, যেগুলো আমাদের বারান্দায় আসতে শুরু করেছে। ঋষিক পাখি পর্যবেক্ষণ করে, পোকামাকড় সংগ্রহ করে এবং সাবধানে তাদের অধ্যয়ন করে। তার কাছে এটি সম্পূর্ণ একটি নতুন বিশ্বের মতো যা সে আবিষ্কার করেছে।”

তার বর্ণনা আমাকে সত্যিই স্পর্শ করেছিল। নরেশ একজন উদ্বিগ্ন অভিভাবক, যিনি তার সন্তানকে ব্যস্ত রাখতে এবং তাকে স্বাস্থ্যকর, কীটনাশকমুক্ত খাবার খাওয়াতে চান, শহরের অন্য কোথাও নানারকম গাছপালা জন্মাতে পারেননি। তবে, তার ছাদবাগানের মাধ্যমে তিনি তার সন্তানের মধ্যে প্রকৃতির প্রতি অনুরাগ সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন।

বিষয়টি নিয়ে খুবই উদ্দীপ্ত। নরেশ পলকহীন চোখে বলে চলেন : “এই প্রথম বছর আমার ছেলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায় এবং যখন শিক্ষক শিশুদের জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, তারা বড়ো হয়ে কী হতে চায় ? তখন আমার ছেলে উঠে দাঁড়িয়েছিল এবং সবাইকে অবাক করে দিয়ে বলেছিল, ‘কম্পোস্ট তৈরি করবো এবং কৃষক হবো।” 

নরেশ তার অভিজ্ঞতায় এতটাই সন্তুষ্ট যে, তিনি তার ছেলের সাথে বীজ রোপণ, গাছে জল দেওয়া, পাখি ও পোকামাকড় দেখা এবং খাবার সংগ্রহের সাথে সুন্দর সময় কাটাতে থাকবেন। নরেশ এই ব’লে তার কথা শেষ করেন যে, “কয়েক দশকের মধ্যে আমাদের বেশিরভাগই শহরে বাস করবে এবং গ্রামে অল্পসংখ্যক কৃষক থাকবে। তাই যারা খাদ্য উৎপাদন করতে জানবে তারা এই বিশে^র রাজা (ও রানি) হবে।”

বিদ্যালয়ের বাগানগুলো শিশুদের পরিবেশ ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রতি ভালো মনোভাব শেখানোর একটি চমৎকার উপায় হতে পারে। কিন্তু নরেশ আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, এ ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এমন একটি চমৎকার পরিবেশ তৈরি করার ক্ষেত্রে এবং শিশুদের বিকাশ ও স্বপ্নপূরণের ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের একটি বড়ো ভূমিকা রয়েছে। শিশুদের অল্প বয়সে প্রকৃতির কাছে নিয়ে যেতে হবে, এমনকি যদি তা একটি ছোটো আকারের ছাদবাগানও হয়। এর মধ্যদিয়ে মানুষ কীভাবে স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রশংসা করতে এবং প্রকৃতিকে লালন করতে করতে বেড়ে উঠতে পারে তার মধ্যে বড়ো ধরনের একটি পার্থক্য তৈরি হতে পারে। 

অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের এই সম্পর্কিত আরও ভিডিও

বিদ্যালয়ে কৃষিবিদ্যা শেখানো

অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের সমস্ত প্রশিক্ষণ ভিডিও এখানে কন্নড় ভাষায় দেখা যাবে:

www.accessagriculture.org/search/all/kn

© Copyright Agro-Insight

 

আপনি কিভাবে সাহায্য করতে পারেন.. আপনার উদার সাহায্য আমাদের ক্ষুদ্র কৃষকদের কৃষি পরামর্শের জন্য তাদের ভাষায় আরও ভালভাবে পৌঁছাতে সক্ষম করবে।.

Latest News

কর্নাটকে গ্রামীণ তরুণেরা ইকোলজিক্যাল কৃষিচর্চার প্রচারের জন্য স্মার্ট প্রযুক্তি সরঞ্জাম ধারণ করেছেন

সম্প্রতি ভারতের কর্নাটকে গ্রামীণ তরুণদের মাঝে যারা এন্টাপ্রেনরস ফর রুরাল অ্যাকসেস (ইআরএ-এস) নির্বাচিত হয়েছেন তাদের নিয়ে চারদিনব্যাপী একটি প্রশিক্ষণ

অ্যাকসেস এগ্রিকালচার তরুণ পরিবর্তনকারী উমর বশির গুরুত্বপূর্ণ স্লো ফুড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন

“আমরা অবিশ্বাস্যভাবে গর্বিত যে, আমাদের উগান্ডার তরুণ পরিবর্তনকারী (চেঞ্জমেকার) উমর ওচেন বশির এ বছর ইতালির তুরিনে তেরা মাদ্রে সালনে দেল গুস্তোতে

অ্যাকসেস এগ্রিকালচার ‘গ্যানডিংগ্যান অ্যাওয়াডর্’ অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সিটি অব দি ফিলিপাইস কমিউনটি ব্রডকাস্টার্স-এর অংশীদার হয়েছে

অ্যাকসেস এগ্রিকালচার ১৮তম গ্যানডিংগ্যান অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ অনুষ্ঠানটি স্পন্সর করে। ৪ মে ২০২৪ এটি অনুষ্ঠিত হয় লস বানোসে। লস বানোসে ইউনিভর্সিটি অব ফিলিপাইনস-এর কলেজ অব ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন-এর ফিলিপাইন কমিউনিটি ব্রডকাস্টার্স অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। এর থিম ছিল এগ্রিকালচার : স্টোরিজ অব চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড হোপ

ভারতের মধ্য প্রদেশে গ্রামীণ তরুণদের মধ্যে ডিজিটাল কৃষিশিল্পোদ্যাগের সংস্কৃতি গড়ে তোলা

গ্রামীণ এলাকায় প্রাকৃতিক কৃষি সহজলোভ্য করার জন্য সদ্য শেষ হওয়া একটি স্মার্ট প্রজেক্টর প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মধ্যদিয়ে ভারতের মধ্য প্রদেশের পাঁচটি নতুন

আমাদের আর্থিক অংশীদারদের ধন্যবাদ