বলিভিয়ার ক্ষুদ্র জৈবচাষিরা তাদের প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন স্বাস্থ্যকর পণ্যগুলো শহর এবং মফস্বল শহরগুলোতে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করার জন্য সংগ্রাম করে, যা কেবল কৃষিরাসায়নিক ব্যবহার করে উৎপাদিত খাদ্যসামগ্রী খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্য-ঝুঁকি সম্পর্কে জনসাধাণকে ধীরে ধীরে সজাগ করে।
যদিও সপ্তাহান্তে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া (হোম ডেলিভারি) পরিষেবা গ্রাহকদের কাছে সরাসরি তাজা পণ্য বিক্রি করার একটি নতুন উপায়, তবে, খোলা বাজারগুলো প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন খাবার বিক্রি করার আরও সুন্দর জায়গা। উন্নয়নশীল অনেক দেশের মতো বলিভিয়াতে সাপ্তাহিক বাজারগুলো বেশ বিস্তৃত কিন্তু সেখানে নতুন কোনো বিক্রেতা যখন খোলা বাজরে প্রবেশ করতে যায় তখন তারা বড়ো ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে।
এগ্রিকল অ্যান্ডেস নামের একটি এনজিও কয়েক বছর ধরে জৈবচাষিদের তাদের উৎপাদিত পণ্য মধ্যস্বত্বভোগীদের বাদ দিয়ে সরাসরি স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে সহায়তা করছে। কোচাবাম্বা বিভাগের কৃষকদের তাদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বিদ্যমান বাজারে বিক্রি করার সুবিধার জন্য একটি জায়গা পেতে এবং বাজারে পণ্য বিক্রি করতে সহায়তা করার জন্য এগ্রিকল স্খানীয় কর্তৃপক্ষসমূহের সাথে চুক্তি করেছে। কিন্তু এটি সবচেয়ে সহজ কাজ বলে মনে হয়েছে।
অভিজ্ঞতা থেকে এগ্রিকল অ্যান্ডেস শিখেছে যে, প্রাকৃতিকভাবে চাষাবাদ করা কৃষকদের মধ্যে এক জনের কাছেও যদি কোনো এক সপ্তাহে বিক্রি করার মতো শাকসবজি বা ফল না থাকে, তাহলে তাদের বিক্রির জায়গাটি প্রচলিত পণ্য বিক্রেতাদের কেউ দখল করে নেবে এবং সে জায়গাটির দখলদারিত্ব চিরদিন ধরে রাখবে। তাই এগ্রিকল কৃষকগোষ্ঠীগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য তাদের প্রচেষ্টা বাড়িয়েছে, যাতে এর সদস্যরা একে অপরকে প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন পণ্য সরবরাহ করতে এবং বাজারে তাদের সাপ্তাহিক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারে।
কিন্তু বাজারে বিক্রেতাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র। যদিও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বাজারের নিয়ম নির্ধারণ করতে পারে, তবুও প্রকৃত ক্ষমতা কিন্তু কিছুসংখ্যক প্রভাবশালী বিক্রেতাদেরই হাতে থাকে। পুরনো বিক্রেতারা আপত্তি জানালে কৃষক-বিক্রেতাদের বাজার থেকে স্থায়ীভাবে উঠিয়ে দিতে পারে।
অগাস্টো লিজাররাগা এগ্রিকল অ্যান্ডেসের একজন তরুণ কর্মী, যিনি বেশিরভাগ চিত্রগ্রহণের দিনে আমাদের সাথে ছিলেন, তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, “কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমার সহকর্মীরা বছরের পর বছর ধরে নির্দিষ্ট বাজারের বিক্রেতাদের সাথে আলোচনা করেই চলেছে, কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা বাজারে জৈবপণ্য বিক্রি করার অনুমতি পচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা নিশ্চিত নয় যে, তাদের এই প্রচেষ্টার কোনো ফল হবে কি না।
স্পষ্টতই, স্বতন্ত্র কৃষকদের জন্য বাজারে সরাসরি প্রাকৃতিকভাবে চাষাবাদ করে উৎপন্ন পণ্যসামগ্রী বিক্রি করতে শুরু করা বেশ চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। দলবদ্ধ হয়ে কাজ করলে সহযোগিতা পাওয়া যায় এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সমর্থনও মেলে। কিন্তু এগ্রিকল অ্যান্ডেসের মতো প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা কৃষিবাস্তুসংস্থানিক কৃষকদের সমর্থন করতে এবং স্বাস্থ্যকর ও ন্যায্য খাদ্যব্যবস্থার দিকে পরিবর্তন আনতে অপরিহার্য।
বাজার মাফিয়া অদৃশ্য হতে পারে কিন্তু এটি বিদ্যমান।
অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের এই সংক্রান্ত অন্য ভিডিওগুলো দেখুন