<<90000000>> দর্শক
<<266>> উদ্যোক্তা 18টি দেশে
<<4647>> টি কৃষিবাস্তুবিদ্যা ভিডিও
<<107>> ভাষা উপলব্ধ

বিপণন যখন শিল্প

Author
Paul Van Mele

প্রায় ৩০ বছর আগে বিশিষ্ট নৃবিজ্ঞানী পল রিচার্ডস ক্ষুদ্র কৃষকদের চর্চাগুলোকে নাটক বা গানের মতো একধরনের পারফরমেন্স হিসেবে বর্ণনা করেছেন। কৃষকেরা চর্চা, মহড়া এবং তাৎক্ষণিক উদ্ভাবনের মাধ্যমে দক্ষতা ও পারদর্শিতা অর্জন করে। আমি সম্প্রতি শিখেছি যে খামারের পণ্য বিপণনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।  

 

ইকুয়েডোরিয়ান আন্দিজ সুইসএইড (SWISSAID) ১২ বছর ধরে নারীদের সংগঠনগুলোকে পরিবেশগত চাষাবাদে তাদের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে আসছে। তারা কৃষকদের নানাধরনের কম্পোস্ট তৈরি করতে শিখিয়েছিল, যার মধ্যে রয়েছে গিনিপিগের সার, সেইসাথে তরল জৈবসার অথবা বায়োলসের সাথে ভালো জীবাণু যা কৃষকেরা তাদের জমিতে প্রয়োগ করে অথবা পাতার সার হিসেবে গাছে বা শাকসবজিতে ছিটিয়ে দেয়। আমরা যে মিশ্র খামারগুলো পরিদর্শন করেছি, সেগুলোতে অজস্র ফল ও সবজি হয়েছে। এই খামাগুলো সাক্ষ্য দেয় যে, এই কৃষকেরা কৃষিপরিবেশগত চাষাবাদ শিল্পে দারুণ পারদর্শী।

 

কিন্তু একবছরের মাথায় সুইসএইড (SWISSAID) বুঝতে পেরেছিল যে, কৃষকদের উন্নত জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও ফুটপাতের উপর তৈরি স্টলগুলো ছাড়া শহরগুলোতে আদিবাসী ও ক্ষুদ্র কৃষকদের নিজেদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করার আর কোনো জায়গা নেই। এছাড়াও বিষাক্ত কৃষি-রাসায়নিক ছাড়া উৎপাদিত পণ্যের জন্য ভোক্তারা বাড়তি মূল্য দিতেও রাজি ছিল না। স্পষ্টতই, কৃষকদের বিপণন বিষয়ে প্রশিক্ষণের এবং তাদের সংগঠিত হওয়ার প্রয়োজন ছিল। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতার প্রয়োজন ছিল।

 

সুইসএইড (SWISSAID)- এর সাথে কৃষিপরিবেশ বিষয়ের একটি ভিডিও নির্মাণের কাজ করার সময় আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, তারা কয়েকটি ক্ষেত্রে কতটা এগিয়ে রয়েছে। এখন পর্যন্ত তুঙ্গুরাহুয়া প্রদেশের পেলিলিওর স্থানীয় সরকার কৃষক সমিতিকে প্রতিষ্ঠিত বাজারগুলোতে তাদের উৎপাদিত জৈবপণ্যগুলো বিক্রি করতে একটি দিন নির্দিষ্ট করে দিয়েছে, যেটিকে তারা ‘ফার্ম টু ফর্ক এগ্রোইকোলজি ফেয়ার’ বলে।

 

তারা টিভি, খবরের কাগজ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর খাবারের পরামর্শ দেন। ভোক্তারা জানেন যে, বৃহস্পতিবার হলো সেই দিন যেদিন কৃষকদের বাজারে বিক্রি করতে আনা পণ্যগুলো রাসায়নিকমুক্ত এবং এখন তারা সামান্য বাড়তি মূল্য দিতেও রাজি। 

 

একদিন সকালে বাজারের আঙিনায় প্রায় ৩০ জন নারীর সাথে একটি প্রশিক্ষণ অধিবেশনে যোগ দিই, আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম যে, প্রশিক্ষণ অধিবেশনগুলো সবই অত্যন্ত গতিময়, প্রাণবন্ত ও কর্মশক্তিপূর্ণ প্রশিক্ষকেরা পরিচালনা করেন, যাদের দর্শকদের আকৃষ্ট করার সকল দক্ষতা রয়েছে। বেশ কয়েকজন কৃষক তাজা পণ্য নিয়ে এসেছেন এবং কয়েকটি লম্বা টেবিলে তারা স্থানীয় মৃৎপাত্র এবং হাতে বোনা সুন্দর ঝুঁড়ি ব্যবহার করে প্রদর্শনের কাজ শুরু করেছেন। বিভিন্ন পাত্র বিক্রির একক হিসাবে বিবেচিত হয়, তারপর তারা সবাই একমত হয় যে, পণ্যের জোগানের নির্দিষ্ট পরিমাণ বিক্রি করতে হবে।

 

একদিন যখন এক তরুণ নাটকের প্রশিক্ষক ভেরোনিকা লোপেজ প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন তখন অধিবেশনটি অন্যরকম গতিময় হয়ে ওঠে। নারীরা সবাই একসাথে ঘুরে ঘুরে অভিনয় করছিলেন। তারা তখনই থামছিলেন যখন ভেরোনিকা নতুন কোনো নির্দেশনা দিচ্ছিলেন, তারা ‘রাগ’, ‘সুখ’ বা ‘ভালোবাসা’র মতো আবেগগুলো প্রকাশ করছিলেন।

 

একটি নাটকের মতো, যখন নারীরা গ্রহকদের প্রতি মনোযোগী হবেন তখন তাদের শরীরের ভাষা কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে তা শেখেন অথবা যখন তারা একে অপরের চোখের দিকে তাকান তখন কী পার্থক্য হয়। তারা শিখেছেন যে, তাদের আচার-ব্যবহার বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত। তবে, তাদের কথাও বলা উচিত। যে সহকর্মী নারী কৃষকেরা তাদের ভালোভাবে চেনেন, তাদের সাথে আনন্দময় ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে চর্চা ও অনুশীলন করে লজ্জা কাটানো যায়।

 

একটি নাটক বা গানের জলসার মতো অভিনেতারা তাদের দর্শকদের যত ভালোভাবে আকৃষ্ট করতে পারবেন তত ভালো পারফরমেন্স হবে। গ্রাহকদের চোখে চোখ রাখা, তাদের সাথে যুক্ত থাকা এবং ধৈর্যের সাথে কথা বলার মতো নতুন দক্ষতার চর্চা ও মহড়া করে ইকুয়েডরের গ্রামীণ নারীরা অনেক দূর এগিয়েছেন, এবং তাদের প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হচ্ছে।

 

কোভিডের সময় বাজারগুলো তিন মাস বন্ধ ছিল। তবুও নারীরা তাদের ভোক্তাদের সাথে এত ভালো সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন যে, শহরের কিছু খদ্দের শহরের আশেপাশের খামারগুলো থেকে সরাসরি পণ্য কেনার পথ খুঁজে বের করেছিলেন। সুইসএইড (SWISSAID) এই খাপখাইয়ে নেওয়াকে উৎসাহিত করেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, খামারবাড়িতে সাইনবোর্ড লাগানো, যাতে খদ্দেররা কৃষি-পরিবেশগত উদপাদকদের সহজে খুঁজে পান।

 

পরিবর্তিত পরিবেশে চাষাবাদ সফলভাবে খাপখাইয়ে নেওয়ার জন্য চর্চা, মহড়া ও উদ্ভাবন প্রয়োজনীয় উপাদান এটা প্রমাণিত। এটি অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাদ্য বাজারজাত করার সাফল্য নির্ধারণ করে।  

 

পল রিচার্ডস ঠিকই বলেছিলেন যে, কৃষি হলো একধরনের পারফরমেন্স। স্পষ্টতই বিপণনও তাই, এবং নাটকের শিল্প কৃষকদের তাদের খদ্দেরদের সাথে কার্যকরভাবে কাজ করতে সহায়তা করতে পারে।

 

অ্যাকসেস এগ্রিকালচার সম্পর্কিত ভিডিওসমূহ

কৃষি-পরিবেশগত (এগ্রোইকোলোজিকাল) বাজার সৃষ্টি

নারী নেতৃত্বকে অনুপ্রাণিত করুন

 

© Copyright Agro-Insight

আপনি কিভাবে সাহায্য করতে পারেন.. আপনার উদার সাহায্য আমাদের ক্ষুদ্র কৃষকদের কৃষি পরামর্শের জন্য তাদের ভাষায় আরও ভালভাবে পৌঁছাতে সক্ষম করবে।.

Latest News

অ্যাকসেস এগ্রিকালচার ‘গ্যানডিংগ্যান অ্যাওয়াডর্’ অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সিটি অব দি ফিলিপাইস কমিউনটি ব্রডকাস্টার্স-এর অংশীদার হয়েছে

অ্যাকসেস এগ্রিকালচার ১৮তম গ্যানডিংগ্যান অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ অনুষ্ঠানটি স্পন্সর করে। ৪ মে ২০২৪ এটি অনুষ্ঠিত হয় লস বানোসে। লস বানোসে ইউনিভর্সিটি অব ফিলিপাইনস-এর কলেজ অব ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন-এর ফিলিপাইন কমিউনিটি ব্রডকাস্টার্স অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। এর থিম ছিল এগ্রিকালচার : স্টোরিজ অব চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড হোপ

ভারতের মধ্য প্রদেশে গ্রামীণ তরুণদের মধ্যে ডিজিটাল কৃষিশিল্পোদ্যাগের সংস্কৃতি গড়ে তোলা

গ্রামীণ এলাকায় প্রাকৃতিক কৃষি সহজলোভ্য করার জন্য সদ্য শেষ হওয়া একটি স্মার্ট প্রজেক্টর প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মধ্যদিয়ে ভারতের মধ্য প্রদেশের পাঁচটি নতুন

উগান্ডায় গ্রামীণ উপদেষ্টা পরিষেবা সঞ্চালকেদের ডিজিটাল দক্ষতা বাড়ানোর কর্মশালা অনুষ্ঠিত

উগান্ডার বুইকওয়ে, বুগিরি, সেমবাবুলে, লিরা ও সোরোতিÑ এই পাঁচটি জেলার প্রায় ৩০ জন রুরাল অ্যাডভাইজারি সার্ভিস (আরএএস)-এর সঞ্চালকদের একটি অরিয়েনটেশন কর্মশালায় অংশ নেন। কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয় ১৫ এপ্রিল থেকে ১৭ মে ২০২৪ তারিখে। এতে প্রকল্প সম্পাদনের সময় রুরাল অ্যাডভাইজারি সার্ভিস সঞ্চালকেদের ডিজিটাল দক্ষতা বাড়ানোর জন্য অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের সম্পদ ও সরঞ্জামের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।

মাদাগাস্কারে মাস্টার প্রশিক্ষকগণের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

মাদাগাস্কারে ‘গ্লোবাল প্রোগ্রাম ফর স্মল-স্কেল এগ্রোইকোলজি প্রোডিউসার্স অ্যান্ড সাসটেইনেবল ফুড সিস্টেম ট্রান্সফরমেশন’ (জিপি-এসএইপি) প্রকল্পের

আমাদের স্পনসরদের ধন্যবাদ