<<90000000>> দর্শক
<<240>> উদ্যোক্তা 17টি দেশে
<<4135>> টি কৃষিবাস্তুবিদ্যা ভিডিও
<<105>> ভাষা উপলব্ধ

আমাদের কৃষকদের জন্য হুমকি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপারমার্কেটগুলো সবসময় স্ট্রবেরি থেকে শুরু করে মাংসের ফালিসহ সব ধরনের পণ্যে পরিপূর্ণ থাকে। তবে, পর্যাপ্ত এই সরবরাহ ধ্বংসাত্মক একটি কৃষিশিল্পের দ্বারা হুমকির মুখে পড়েছে। টম ফিলপট তাঁর সম্প্রতি প্রকাশিত ‘পেরিলাস বাউন্টি’ বইতে ক্যালিফোর্নিয়া ও মধ্য-পশ্চিম অঞ্চলের জন্য হুমকিপূর্ণ দুর্যোগের রূপরেখা এঁকেছেন।   

 

ক্যালিফোর্নিয়ার মধ্য উপত্যকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য প্রচুর পরিমাণে ফল ও শাকসবজির পাশাপাশি বিশ্বের শতকরা ৮০ ভাগ বাদাম ও পেস্তা উৎপাদন করে। অভূতপূর্ব এই উৎপাদনের সেচ মাটি খনন করে তুলে আনা জল দিয়ে দেওয়া হয় এবং এটি কখনো প্রতিস্থাপন করা যায় না। একসময় মধ্য উপত্যকা একটি বিস্তীর্ণ জলাভূমি ছিল। সিয়েরা মাদ্রে পর্বতমালার তুষার গলে যাওয়া জল সেচের কাজে ব্যবহার করার জন্য ১৯৩০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বাঁধ ও খালগুলোর একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছিল।

 

কিন্তু পশ্চিমে বৃষ্টিপাত অনিয়মিত হওয়ায় এবং কয়েক বছর ধরে তুষারপাত কমে যাওয়ায় বাদামের সব গাছে সেচ দেওয়া যাচ্ছে না, তাই ভালো জল পার্থক্য তৈরি করছে। ভূগর্ভ থেকে এত জল তোলা হয়েছে যে, স্থল স্তর ২৯ ফুট (৮.৮ মিটার) নেমে গেছে। পাতালের মাটি সংকুচিত হওয়ার সাথে সাথে এটি ক্ষমতাও হারিয়েছে। ফলে এটি এখন আগের তুলনায় কম জল ধারণ করতে পারে।  

 

মধ্য-পশ্চিমে বাড়িতে বাড়িতে পারিবারিক খামারে ভুট্টা, গম, ওটস ও রাই এমন কি ফল ও শাকসবজির বৈচিত্র্যময় চাষাবাদ হয়েছে। গবাদিপশুগুলো খামারে উৎপাদিত ফোডার (পশুখাদ্য) খেয়েছে। ১৯৬০ সাল থেকে এই সংহত পদ্ধতিটি সরল একটি পদ্ধতিতে প্রতিস্থাপিত হয়েছে, কেবল ভুট্টা (কর্ন) আর সয়াবিন উৎপাদিত হচ্ছে, যেখানে গবাদিপশুগুলোকে কারাখানার খামারে পাঠানো হচ্ছে। ফসল আর প্রাণী এখন আলাদা খামারে বেড়ে উঠছে।

 

শূকরের বড়ো আস্তাবলগুলো শস্য-খামার থেকে এত দূরে যে, শূকরের বর্জ্য সার হিসেবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বরং শূকরের বর্জ্যরে সারগুলো মিসিসিপি নদী এবং মেক্সিকো উপসাগরে চলে যাচ্ছে, যেখানে নিউ জার্সির সমান একটি মৃত বলয় (ডেড জোন) তৈরি হচ্ছে। ফলে সমৃদ্ধ মাছ ও চিংড়ি শিল্প ধ্বংস হচ্ছে। মাটি এখন আনুমানিক একর প্রতি ৫.৪ টন (হেক্টর প্রতি ১৩.৫ টন) হারে ক্ষয় হচ্ছে। উর্বর কালো মাটি দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। 

 

মুষ্টিমেয় কয়েকটি করপোরেশন মাংস কেনে (টাইসন ফুডস, কারগিল, জেবিএস এবং স্মিথফিল্ড ফুডস- এগুলো চীনা ডাব্লিউএইচ গ্রুপের মালিকানাধীন) এবং মাত্র চারটি কোম্পানি ইউএসএ-তে বেশিরভাগ রাসায়নিক সার তৈরি করে। তাই এই অল্পসংখ্যক ক্রেতা ও বিক্রেতার বেঁধে দেওয়া মূল্যে কৃষকেরা পণ্যসামগ্রী কিনতে বাধ্য হচ্ছে। বাধ্যতামূলক মূল্যের চাপে পড়ে অনেক কৃষক পরিবার কৃষি-ব্যবসা ছেড়ে দিতে বধ্য হয়েছে। ১৯৪০-২০১৮ সালের মধ্যে আইওয়াতে খামারের সংখ্যা ২ লাখ ১৩ হাজার থেকে কমে ৮৬ হাজোরে নেমে গেছে, ক্ষতির পরিমাণ শতকরা ৬০ ভাগ।  

 

এই নিবিড় রাসায়নিক চাষাবাদ ব্যবস্থার বেশিরভাগই লোকশানে পরিচালিত হচ্ছে যদিও ফেডারেল শস্য-বীমার কল্যাণে লাভ হচ্ছে, যা বেসরকারি কোম্পানি পরিচালনা করে থাকে। তবে, মার্কিন সরকার এতে ভর্তুকি দিচ্ছে।

 

কৃষি বড়ো বড়ো সংস্থার উপার্জনের পথ করে দেয়। মনসান্টো একটি করপোরেশন। সংস্থাটি এগ্রোকেমিক্যাল তৈরি করে। ২০০০ সালে সংস্থাটির মূল্য ছিল ৫০০ কোটি ডলার। ২০১৮ সালে যখন ক্রেতা সংস্থাটি কিনে নিয়েছিল তখন এর মূল্য দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৬০০ কোটি ডলারে। এই বছরগুলোতে মনসান্টো বীজ ও কীটনাশক শিল্পের ওপর তার দখল প্রতিষ্ঠা করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন ভুট্টা, সয়াবিন এবং তুলার প্রায় সব জাত জিনগতভাবে পরিবর্তন করে  উৎপন্ন করা হচ্ছে, যাতে শস্যগাছগুলো সহজে ভেষজনাশক, বিশেষ করে গ্লাইফোসেট সহ্য করতে পারে। আর এগুলো বিক্রি করা হয় ‘রাউন্ডআপ’ ব্র্যান্ড নামে। 

 

প্রথমেই কৃষকেরা এগুলো পছন্দ করেছেন। তারা জিনগতভাবে পরিবর্তিত ‘রাউন্ড আপ রেডি’ বীজ বপণ করেন এবং কিছুদিন পরে অঙ্কুরিত চারাগাছগুলোতে ভেষজনাশক ছিটিয়ে দেন, এতে সমস্ত আগাছা মরে যায় এবং ভুট্টা ও সয়াবিন তাজা ও সবুজ থেকে যায়।

সমস্যা হচ্ছে, আগাছা ভেষজনাশকের বিরুদ্ধে অনবরত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে থাকে। তাই বীজ কোম্পানিগুলো শস্যের নতুন জাতগুলোর জন্য এমন কৌশল উদ্ভাবন করে যে, যাতে তারা আরও বেশি ভেষজনাষক প্রতিরোধী হয়ে উঠতে পারে।  

 

এইসব সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায়ও আছে। ক্যালিফোর্নিয়ার কৃষিবিদ স্টিফেন গ্লিসম্যান সেচ ছাড়াই আঙ্গুর চাষ করেন। মধ্য-পশ্চিমে, ডেভিড ব্র্যান্ড ও টম ফ্রান্টজেনের মতো কৃষক-উদ্ভাবকেরা গবেষকদের সাথে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ-দানাদার শস্য খামার তৈরির জন্য কাজ করছেন, যেখানে ফসল রক্ষা করার জন্য জৈবপদার্থ দিয়ে মাটি পুনর্নির্মাণ করা হয়।

 

আমি এই উদ্ভাবক কৃষকদের সম্পর্কে পড়ে দারুণ উৎসাহিত হয়েছিলাম। কিন্তু এমন আরও কিছু আছে, যা ভালো খেতে এবং ভালোভাবে বাঁচতে আমরা সবাই করতে পারি। আমরা পরি :

 

  • ক্নিজে একটি বাগান করতে
  • স্থানীয় পারিবারিক কৃষকদের কাছ থেকে পণ্যসামগ্রী কিনতে
  • জৈবখাদ্য খেতে
  • এমন আইন প্রণেতাদের ভোট দিতে যারা একচেটিয়া বিরোধী আইনকে সমর্থন করে
  • জৈবচাষাবাদ ও কৃষিবিদ্যা নিয়ে আরও গবেষণার জন্য চাপ দিতে

 

আরও পড়ুন

Philpott, Tom 2020 Perilous Bounty: The Looming Collapse of American Farming and How We Can Prevent It. New York: Bloomsbury Publishing. 246 pp.

 

অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের এসব বিষয় সম্পর্কিত ভিডিও

বীজের প্রতি কৃষকের অধিকার

কৃষকের বীজের অধিকার : গুয়েতেমালার অভিজ্ঞতা

তরল এবং দানাদার অর্গানিক বায়োসার

ভারমিওয়াশ : শস্যের এক জৈব টনিক

মাটি ও গাছপালার জন্য ভালো জীবাণু

আপনি কিভাবে সাহায্য করতে পারেন.. আপনার উদার সাহায্য আমাদের ক্ষুদ্র কৃষকদের কৃষি পরামর্শের জন্য তাদের ভাষায় আরও ভালভাবে পৌঁছাতে সক্ষম করবে।.

Latest News

অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের আরবি ভাষার প্ল্যাটফর্মের সূচনা : একটি উত্তেজনাকর মাইলফলক

অ্যাকসেস এগ্রিকালচার আনন্দের সাথে ঘোষণা করছে যে, তারা আরবিভাষীদের জন্য আরবি ভাষার প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে। এতে করে বহু আরবিভাষীর কাছে পৌঁছানো যাবে

অ্যাকসেস এগ্রিকালচার-এর নতুন ওয়েবসাইটে স্বাগত

কৃষিবিদ্যা এবং জৈবচাষাবাদের ওপর কৃষক প্রশিক্ষণ ভিডিওর বিশ্বের বৃহত্তম বহুভাষিক লাইবেরি অন্বেষণ করুন ব্রাসেলস, বেলজিয়াম — অ্যাকসেস এগ্রিকালচার তাদের

মিশরে অগ্রগামী কাজের জন্য অ্যাকসেস এগ্রিকালচার প্রশংসিত

সিজিআইআর, একটি বৈশ্বিক কৃষি-গবেষণা নেটওয়ার্ক, এর নির্বাহী ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডক্টর ইসমাহানে ইলাউফি মিশরের প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চলে নারী ও তরুণ শ্রেণিসহ কৃষকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

লাইট ক্যামেরা অ্যাকশন ফিলিপাইনে অ্যাকসেস এগ্রিকালচার-শৈলীর ভিডিও নির্মাণ প্রশিক্ষণ

সম্প্রতি ফিলিপাইনের চারটি উন্নয়ন সংস্থার বারো জন অংশগ্রহণকারী দুই সপ্তাহের একটি ভিডিও নির্মাণ প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নেন। প্রশিক্ষণে উচ্চমানের কৃষক-থেকে-কৃষক প্রশিক্ষণ ভিডিও নির্মাণের অত্যাবশ্যক দক্ষতাগুলো শেখানো হয়, যে-ভিডিওগুলো নির্মাণে গুণমান, বিষয়বস্তু এবং অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের কঠোর মান মেনে চলতে হয়।

সাম্প্রতিক ভিডিও

আমাদের স্পনসরদের ধন্যবাদ