
পান্ডুলিপি রচনা-বিষয়ক একটি কর্মশালা চলাকালে লেখকগণ ফ্যাক্ট শিট যাচাই করার পাশাপাশি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁদের ধারণাগুলো শেয়ার করার জন্য মাঠে ফিরে যান। কেননা, একজনের সাথে কথা বলাই যথেষ্ট নয়, আপনার বিষয় সম্পর্কে পরিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি পেতে আপনাকে বেশ কয়েক জনের সাথে কথা বলতে হবে।
ক্যারিলো, কটোপ্যাক্সি, ইকোয়েডোরে আমাদের কয়েকজন পান্ডুলিপি লেখক বছরের পর বছর ধরে জনগোষ্ঠীর সাথে যোগাযোগ রেখেছিলেন। এই গ্রামে সংগঠন নিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা ছিল। বহু বছর ধরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এমন নারীদের একটি বড়ো দলকে আমাদের কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী লেখকগণ একত্র করতে সক্ষম হয়েছেন।
আমি কৃষিবিদ ডিয়েগো মন্টালভো এবং পরিবেশ প্রকৌশলী গুয়াদালুপে পাদিল্লা, যিনি জনগোষ্ঠীতে কাজ করেন, তাঁদের সাথে ক্যারিলোতে ছিলাম। যখন আমরা কমিউনিটি সেন্টারের বারান্দায় মিলিত হয়েছিলাম তখন ডোনা ভেরোনিকা নামের একজন নারী তাঁর গল্প শুনিয়েছিলেন। তিনি কৃষিবিদ্যায় পড়াশোনা করার জন্য ক্যারিলো ছেড়ে গিয়েছিলেন। ¯œাতক পাশ করার পর তিনি দুই বছর শহরে ছিলেন কিন্তু তাঁর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। তাঁর শিক্ষার কারণে তাঁকে স্থানীয় একটি সংস্থায় নেতৃস্থানীয় একটি ভূমিকায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, যে দায়িত্ব তিনি বছরের পর বছর ধরে পালন করেছিলেন। এ দায়িত্ব পালন করা সবসময় সহজ হয় না। কেননা, পুরুষেরা পুরুষ নেতাদের কথা শুনতে চায় এবং নারী নেতৃরা যখন কথা বলেন তখন পুরুষেরা সভায় বিঘœ ঘটানোর লক্ষ্যে অহেতুক কথা বলেন।
একটি খোলামেলা ও দরকারি সভা শেষ হওয়ার পর নারী কৃষকেরা নিজেদের মাঝে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আরেকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করেন, যেটি আরও আকর্ষণীয় : সেটি হলো পশুস্বাস্থ্য
গবাদিপশুকে কীভাবে টিকা দিতে হয়, কীভাবে ওষুধ দিতে হয় এবং এমন কি দুধ দেয় এমন গবাদিপশুর ছোটোখাটো অস্ত্রোপচার কীভাবে করতে হয় তাও শিখতে চান তাঁরা। ভেরিনোকা ব্যাখা করে বলেন যে, বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি গবাদিপশু সম্পর্কে জানতে গিয়ে প্রায় সবই শিখেছিলেন, এমন কি কৃত্রিম প্রজনন সম্পর্কেও। তিনি এই দলটিকে গবাদিপশু-বিষয়ে প্রশিক্ষণ পেতে সাহায্য করতে চান।
নারী দলটি দাবি করেছিল যে, গুয়াদালুপে তারা নিজেদের গবাদিপশুর জন্য কীভাবে খাদ্য তৈরি করতে পারে সে-বিষয়ে আরও তথ্য পেতে চায়। এটি আমার দৃষ্টি আকৃর্ষণ করেছিল যে, এই মনখোলা, সুসংগঠিত নারী দলটি গোরু সম্পর্কে এত কিছু বলতে চেয়েছিল। যখন আমি আমাদের কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী আরও কয়েক জন লেখকের সাথে কথা বলেছিলাম তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, কেন তাঁরা পশুখাদ্য বিষয়ে এত কিছু জানতে চায়।
এই কৃষকদের পূর্বপুরুষেরা বহু শতাব্দী ধরে আলু চাষ করে আসছিলেন। তাঁরা আলুর চাষ বাদ দিয়ে গবাদিপশু পালন করতে আগ্রহী। কারণ, বেগুনি টপ (পার্পল টপ) নামের রহস্যময় এক রোগের কারণে আলু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, যা বিজ্ঞানীরা এখনও ধরতে পারেননি। রোগটি আলু নষ্ট করে দেয়। রোগ বহনকারী ছোটো আকারের পোকা সাইলডি মেরে বেগুনি টপ রোগ নির্মূলের জন্য কৃষকেরা প্রতিসপ্তাহে ক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করেছেন। কিন্তু বছরে খামার প্রতি একহাজার ডলার খরচ করেও তাঁরা রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না।
অন্যদিকে ক্যারিলোর গড়ানো ক্ষেতগুলো আলফালফা ও অন্যান্য পশুখাদ্যের উপযোগী ফসল উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত। এবং কুইটোর মতো শহরগুলোতে দ্রুত লোকসংখ্যা বাড়ছে এবং কৃষকেরা যত দুধ সরবরাহ করছে তার সম্পূর্ণটা শহরবাসী কিনে নিচ্ছে। নারী কৃষকেরা দুধ বিক্রি করে প্রতিসপ্তাহে টাকা পাচ্ছেন, ফলে তাঁরা পরিবারের সদস্যদের জন্য খাবার কিনতে পারছেন। এ-কারণেই নারী নেতৃদের গোরু পালনের প্রতি এত আগ্রহ।
ক্ষুদ্র কৃষকেরা সবসময় পরিবর্তনের সাথে খাপখাইয়ে নিতে পারেন, তাঁরা এক চাষাবাদ পদ্ধতি থেকে অন্য, সম্পূর্ণ ভিন্ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন করতে ইচ্ছুক। প্রাকৃতিক পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে খাপখাইয়ে নিতে তাই আলু চাষ থেকে গোরু পালন। নারী কৃষকেরা প্রায়ই নেতৃত্ব-বিষয়ক প্রশিক্ষণের মূল্য দেন। তবে, চাষাবাদের জন্য তাদের ক্রমাগত নতুন প্রযুক্তিগত তথ্যের প্রয়োজন হয়, যা ক্ষুদ্র চাষিরাও পেতে চান।
দুগ্ধজাত গরুর উপর এক্সেস এগ্রিকালচারের ভিডিও
Keeping milk free from antibiotics
Taking milk to the collection centre
Making balanced feed for dairy cows
Calcium deficiency in dairy cows