শিশুকালে স্কুলে পড়ার সময়েই ভোক্তাদের সহজে শেখানো যায়।
রোকাসানা ক্যাসেলেন একজন এনজিও কর্মী। তিনি বলিভিয়ায় ‘অ্যাগ্রিকল অ্যান্ডেস’ নামের একটি সংস্থায় কাজ করেন। ২০২১ সালের গোড়ার দিকে রোকসানা কোচাবাম্বার আশেপাশের পাবলিক স্কুলগুলোতে গিয়ে পরিচালকদের জিজ্ঞেস করেন যে, তারা তাদের জীববিজ্ঞান পাঠ্যক্রমে নতুন একটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে আগ্রহী কি না?
তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন, “না, আমার একটি নির্দিষ্ট কর্মসূচি রয়েছে, যা আমাকে অনুসরণ করতে হবে।” অনেকে রোকসানাকে তাদের জীববিজ্ঞানের শিক্ষকদের কাছে যেতে দিতে রাজি হন। কোচাবাম্বার আশেপাশের বিভিন্ন স্কুলের মোট আঠারো জন শিক্ষক খাবার এবং খাবার কোথা থেকে আসে সে বিষয়ে কিছু পাঠ যোগ করতে রাজি হন। খাবারের বেশিরভাগই কৃষি-রাসায়নিক পদার্থে চুবিয়ে নেওয়া হয়, যার কারণে ত্রুটিপূর্ণ মানবসন্তান জন্মানো থেকে শুরু করে নদ-নদী মাছ পর্যন্ত মরে যাচ্ছে- সব কিছুই গভীর সমস্যার মধ্যে ডুবে আছে।
কোর্সটি স্থানীয়ভাবে ডিজাইন করা হতেই হবে। কেননা, বলিভিয়ার অনেক লোক বিশ^াস করে যে, কীটনাশক প্রথম বিশে^র সমস্যা এবং এই বিষগুলো এখানে খুব কমই ব্যবহার করা হয়।
দুর্ভাগ্যবশত, ২০২১ সালে বৈশি^ক মহামারি কোভিড-১৯-এর সংক্রমণের কারণে স্কুলগুলো বন্ধ ছিল। ফলে ওই ১৮ জন শিক্ষক তাদের কৃষিবিদ্যার ক্লাসগুলো ‘অ্যাগ্রিকল অ্যান্ডেস’ কর্তৃক নিয়োগকৃত একজন বিশেষজ্ঞের সাহায্যে নিয়েছিলেন, যিনি মূলত অনলাইনে একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা দেখান।
পরের বছর, ২০২২ সালে যখন স্কুলগুলো পুনরায় চালু হয় তখন শিক্ষকদের পাওয়ার পয়েন্ট ব্যবহার করে ব্যক্তিগতভাবে ক্লাস নেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। শিক্ষদের মধ্যে ১৪ জন ক্লাস নেন। পাঁচটি স্কুল কৃষিবিদ্যা মেলার আয়োজন করে, যেখানে শিক্ষার্থীরা অন্যান্য শিশু এবং মেলা দেখতে আসা অভিভাবকদের জন্য প্রদর্শনী তৈরি করে। দুটি স্কুল তাদের নতুন জ্ঞান কাজে লাগিয়ে পরিবেশবান্ধব গাছপালা রোপণ করে বাগান তৈরি করে।
এই প্রচেষ্টার জন্য আমাদের একটি প্রতিনিধি দল একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ফলক ও প্রশংসাপত্র অর্পণ করে শিক্ষকদের সম্মানিত করেন।
অনুষ্ঠানে, রোকসানা স্কুলের শিশুদের অভিভাবকদের নিয়ে গবেষণা করে শিক্ষকদের অভিজ্ঞতাকে কীভাবে মূল্যায়ন করছেন সে সম্পর্কে সংক্ষেপে কথা বলেন। তিনি এখনও ফলাফলগুলি সংকলন করছেন, কিন্তু তারা দেখায় যে অভিভাবকরাও তাদের বাচ্চারা স্কুলে যা পড়াশোনা করেছে তা থেকে শিখেছে। পিতামাতারা বুঝতে পেরেছিলেন যে তাদের অনেক প্রিয় ফল এবং শাকসবজি কীটনাশক দিয়ে উত্পাদিত হয়, যা পরিবারের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক এবং নিরাপদ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করা মূল্যবান।
স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি এবং পুষ্টি সবই শক্তভাবে যুক্ত, কিন্তু আধুনিক গবেষণা-ও-উন্নয়ন তাদের আলাদা করে দিয়েছে। রাসায়নিক-নিবিড় কৃষি অনেক কৃষকের কাছে আবেদন করে কারণ এটি উচ্চ ফলন দিতে পারে (অন্তত যতক্ষণ না মাটি তাদের জীবন এবং কার্বন হারিয়েছে)। কিন্তু ভোক্তারা যা কিনতে এবং খেতে চায় কৃষকরা তাই উৎপাদন করবে। আমাদের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের ঝুঁকি সম্পর্কে নিজেদেরকে শিক্ষিত করার সময় এসেছে। স্কুলগুলি শুরু করার সঠিক জায়গা।
পেরুতে স্কুলিং সম্পর্কিত একটি ভিডিও
ছবি: ‘অ্যাগ্রিকল অ্যান্ডেস’-এর সৌজন্যে