গ্রামীণ এলাকায় প্রাকৃতিক কৃষি সহজলোভ্য করার জন্য সদ্য শেষ হওয়া একটি স্মার্ট প্রজেক্টর প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মধ্যদিয়ে ভারতের মধ্য প্রদেশের পাঁচটি নতুন ইআরএ (এন্টারপ্রেনর ফর রুরাল অ্যাকসেস) দল নির্বাচিত করা হয়েছে। তাদের স্মার্ট প্রজেক্টর ও অন্যান্য ব্যবসায়িক সরঞ্জাম দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে, যাতে তারা স্মার্ট প্রজেক্টর ব্যবহার করে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ভিডিও দেখিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন।
মধ্য প্রদেশ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় জিআইজেড-সুএটিআই (সাপোর্ট টু অ্যাকসেস এগ্রিকালচার ট্রান্সফরমেশন ইন ইন্ডিয়া)-র অংশ হিসেবে ২৬ ও ২৭ জুন ২০২৪ ভোপালে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়, জিআইজেড-সুএটিআই অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করে।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন মধ্য প্রদেশ সরকারের কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক শ্রী জিতেন্দ্র সিং পারিহার। তিনি নতুন ইআরএ দলকে অভিনন্দন জানান। তিনি অ্যাকসেস এগ্রিকালচার-এর সুসংগঠিত প্রশিক্ষণ ভিডিও এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সেগুলো পৌঁছানোর ব্যবস্থাপনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
শ্রী জিতেন্দ্র সিং পারিহার প্রতিটি ইআরএ দলের হাতে স্মার্ট প্রজেক্টর তুলে দেন। এ সময় তিনি বলেন, “আমাদের কৃষকদের সারাবিশে^র জ্ঞানে সমৃদ্ধ করার জন্য আমি এই মডেলটির প্রচুর সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। এই কর্মসূচি যেন মধ্য প্রদেশের তিন-চারটি জেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে, এটিকে আরও অনেক জেলায় ছড়িয়ে দিতে হবে।”
প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে জিআইজেড-ইন্ডিয়ার জাতীয় সিনিয়র উপদেষ্টা নর্মেতা শর্মা, জিআইজেড-ইন্ডিয়ার উপদেষ্টা অশোক কুমার এবং তাঁদের পাশাপাশি মধ্য প্রদেশের চারটি জেলার জৈব-কৃষিকাজের জন্য নিয়োজিত নোডাল কর্মকর্তাবৃন্দ (প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) উপস্থিত ছিলেন। এদের প্রত্যেককে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে কৃষি-বিভাগ থেকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছিল।
ইআরএ দলগুলোর সদস্যগণ একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ পরামর্শমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁরা মধ্য প্রদেশের ছতারপুর, পান্না এবং সাগর এই তিনটি জেলা থেকে এসেছিলেন এবং তাঁরা অভ্যুদয় সংস্থা, পিআরএডিএএন, এমভিএসএস, পিএসআই এবং এসআরআইজেএএন এনজিও-এর সাথে যুক্ত।
দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত একের সাথে অন্যের আদান-প্রদান (ইন্টারঅ্যাকটিভ) ও হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে নি¤েœর বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল:
১. স্মার্ট প্রজেক্টরের কাজ এবং এর ব্যবহার, ২. অ্যাকসেস এগ্রিকালচার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সাথে পরিচিত হওয়া, ৩. প্রশিক্ষণ ভিডিও প্রদর্শনের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন, ৪. প্রতিটি ইআরএ দলের একটি করে মৌলিক ব্যবসায়ের পটভূমির মডেল তৈরি, ৫. ভিডিও দেখানোর সময় পর্যবেক্ষণ এবং ডেটা ট্র্যাক করার জন্য অ্যাকসেস এগ্রিকালচার সরঞ্জামের ব্যবহার, ৬. যোগাযোগ ও তথ্য আদান-প্রদান এবং ৭. প্রতিটি ইআরএ দলের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে নতুন ইআরএ দলগুলোর সাথে বিহার ও অন্ধ্র প্রদেশের বর্তমান ইআরএ-দের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের একটি অধিবেশনও অন্তর্ভুক্ত ছিল। দ্বিতীয় দিন প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে শেখা পাঠগুলোর বাস্তবায়নের জন্য বিদিশা জেলার একটি গ্রামে মাঠ যাত্রার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেখানে যাচাই করে দেখা হয়েছিল যে, ইআরএ দলগুলো স্মার্ট প্রজেক্টর ব্যবহার করে কৃষক জনগোষ্ঠীগুলোতে সহজে ভিডিও প্রদর্শন করতে পারছে কি না।
অংশগ্রহণকারীগণ আদান-প্রদানমূলক অধিবেশন, প্রদর্শনী, ব্যবহারিক কাজের পাশাপাশি মডেল অনুশীলনের প্রশংসা করেন। তারা বিশেষ করে ব্যবসায়ের পটভূমির মডেল এবং বর্তমান ইআরএ-দের সাথে প্রাণবন্ত অভিজ্ঞতার বিনিময় পছন্দ করেন।
নতুন ইআরএ-গণ জিআইজেড-সুএটিআই এবং অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের প্রতি তাঁদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা নিজেদের ব্যবসা বাড়ানোর সাথে সাথে স্মার্ট প্রজেক্টর ব্যবহার করে প্রাকৃতিক চাষাবাদচর্চায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেন এবং এ ব্যাপারে উৎসাহ প্রকাশ করেন।
জিআইজেড-সুএটিআই-এর একটি বাস্তবায়নকারী অংশীদার হিসেবে অ্যাকসেস এগ্রিকালচার স্থানীয় অংশীদারদের সহযোগে মধ্য প্রদেশ কর্নাটক ও আসামে কৃষিবিদ্যা (এগ্রোইকোলজি) এবং প্রাকৃতিক চাষে কৃষকদের সক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতা করেছে।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি পরিচালনা করেন অ্যাকসেস এগ্রিকালচার ভারতের এন্টাপ্রেনর প্রশিক্ষক নন্দিনী পাক্কি ও মৌনিকা লিঙ্গিরেড্ডি। তাঁদের সহযোগিতা করেন আর রামান ও সাবিত্রী মহাপাত্র।