যে কারণে আমরা শুরু করলাম
উন্নয়নশীল দেশে কৃষিবিষয়ক পরামর্শসেবা প্রদান করার ক্ষেত্রে নানা ধরনের বাধার মুখোমুখি হতে হয়, যেমন বিভিন্ন বিষয়ে কৃষকদের প্রশ্ন এবং এগুলোর যথাযথ উত্তর পাওয়া: ফসল ফলানো, গবাদিপশু পালন, মাছচাষ, প্রক্রিয়াকরণ, ব্যবসা, বিপণন এবং অর্থিক বিষয়াদি। সীমিত সম্পদ ও লোকবল নিয়ে লক্ষ লক্ষ কৃষকের কাছে পৌঁছাতে পরামর্শদাতাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে।
দেশজুড়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, এনজিও, সম্প্রসারণসেবা প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি, রেডিও স্টেশন এবং কৃষক-ভিত্তিক সংস্থাগুলো তাদের কর্মী এবং কৃষকেদের জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণ উপকরণ উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
গ্লোবাল ফোরাম ফর রুরাল অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেস (GFRAS), সাস্টেইনেবল অ্যাগ্রিকালচার ইনিশিয়েটিভ (SAI) প্লাটফর্ম এবং সুইস অ্যাজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন (SDC) দ্বারা ২০১১ সালে পরিচালিত একটি অনলাইন জরিপ থেকে জানা যায় যে, কৃষকেরা কৃষিবিষয়ক প্রশিক্ষণ ভিডিওর জন্য প্রধানত বিদেশি সংস্থাগুলোর ওপর নির্ভর করে থাকে। যদি কৃষকের নিজস্ব স্থানীয় ভাষায় কৃষিবিষয়ক ভিডিওর সিডি/ডিভিডি সহজে পাওয়া যায়, তবে তারা তাদের পরিবার বা প্রতিবেশীদের সাথে একত্রে ভিডিওগুলো দেখতে পারেন এবং যদি তারা মনে করেন যে, ভিডিওগুলো দেখে তারা লাভবান হচ্ছেন, তাহলে তারা টাকা খরচ করে হলেও ভিডিওগুলো দেখবেন।
একটি জরিপে অংশগ্রহণকারী কৃষকদের মধ্য থেকে শতকরা প্রায় ৮৫ ভাগের মতে স্থানীয় ভাষায় কৃষিবিষয়ক প্রশিক্ষণ ভিডিও তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভিডিওগুলো যাতে সহজে নিজেদের মধ্যে আদানপ্রদানযোগ্য হয় এবং বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারণ সেবাকর্মী এবং কৃষকসম্প্রদায়ের ব্যবহার করার মতো হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় ভাষায় নিম্নমানের অধিক সংখ্যায় ভিডিও তৈরি করা ঠিক নয়। যদি অন্যদেশে তৈরি করা ভিডিও প্রাসঙ্গিক ও ভালো মানের হয়ে থাকে এবং ভিডিওর পাণ্ডুলিপিগুলো সহজে পাওয়া যায়, তাহলে বিভিন্ন সংগঠন ভিডিওগুলো ব্যবহার এবং অনুবাদ করতে আগ্রহী। সুতরাং, বাস্তব চাহিদার কথা মনে রেখে মানসম্পন্ন কৃষি-প্রশিক্ষণবিষয়ক ভিডিও অনলাইনে দেখা, ডাউনলোড করার সুযোগ করে দেওয়া এবং কৃষকের হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।
যেভাবে আমরা শুরু করলাম
অ্যাক্সেস এগ্রিকালচারের প্রতিষ্ঠাতারাঃ ২০১২ সালে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর কৃষি-প্রশিক্ষণভিত্তিক ভিডিওগুলো শেয়ার করা এবং প্রচারের লক্ষ্যে দুটি মিডিয়া কোম্পানি, অ্যাগ্রো-ইনসাইট এবং কান্ট্রিওয়াইজ কমিউনিকেশন আন্তর্জাতিক এনজিও অ্যাক্সেস এগ্রিকালচার প্রতিষ্ঠা করে।
অ্যাক্সেস এগ্রিকালচারের কর্মসূচি শুরু করার জন্য প্রাথমিক তহবিল পাওয়া গেছে অ্যাগ্রো-ইনসাইট এবং কান্ট্রিওয়াইজ কমিউনিকেশন থেকে। পরবর্তীতে প্রধান আর্থিক সহায়তা পাওয়া যায় সুইস অ্যাজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন (SDC) থেকে। এর পাশাপাশি অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকেও নানা ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ পাওয়া গেছে।
অ্যাগ্রো-ইনসাইট, বেলজিয়ামভিত্তিক একটি সংস্থা, এটি ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সংস্থাটি গত ২০ বছর ধরে এশিয়া ও আফ্রিকায় পাবলিক সেক্টরে কৃষিবিষয়ক গবেষণা এবং উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। অ্যাগ্রো-ইনসাইট জুমিং-ইন, জুমিং-আউট পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষক থেকে কৃষক প্রশিক্ষণে মানসম্পন্ন ভিডিও তৈরি করে আসছে যা কৃষি-উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে।
কান্ট্রিওয়াইজ কমিউনিকেশন, ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি একাধিক পুরস্কার বিজয়ী যুক্তরাজ্যভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা যা ভিডিও এবং মাল্টিমিডিয়া প্রডাকশন এবং কৃষি, খাদ্য ও গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণের বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান। বিশ্বব্যাপী এটি বেসরকারি সংস্থা, সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করছে। মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণবিষয়ক ভিডিওর স্থানীয় ভাষার সংস্করণ তৈরিতে সহায়তা প্রদান করার গৌরবোজ্জ্বল অভিজ্ঞতা রয়েছে এই সংস্থার।