কোভিড-১৯ মহামারির কারণে গত কয়েক মাস ধরে নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এটি কেবল জনসাধারণের স্বাস্থ্যের ওপরই প্রভাব ফেলে নি, কৃষি চেইন ভ্যালু ভেঙে দিয়েছে, গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।
বেনিনের মতো স্বল্প-আয়ের দেশগুলোর অবস্থা আরো সংকটাপন্ন। মহামারি ছড়িয়ে পড়া রোধ-ব্যবস্থা কার্যকর করার সাথে সাথে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড কমে গেছে এবং কৃষিকাজ ও কৃষি-ব্যবসায়ের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বেনিনের মালিকি অ্যাগনোরো জানিয়েছেন, “আমাদের এনজিও ‘ফ্রন্টিয়ার্স এবং ডিউরেবল ডেভেলপমেন্ট’-এর গৃহীত কিছু উদ্যোগ ভোগান্তিতে পড়েছে।” তিনি আরো জানান, “আমাদের এগ্রোইকোলজি প্রবৃত্তি প্রকল্প এবং টেঙ্গুইতা’য় স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্য নির্মিতি উদ্যানগুলো বন্ধ করে দিতে হয়েছিল।”
“বাগানগুলোও রক্ষণাবেক্ষণ করা যায় নি, এবং আমাদের কিছু জিনিস চুরি হয়ে গেছে। অ্যাডজোউনে চোরেরা আমাদের মাছের প্রকল্প থেকে মাছ চুরি করছে। কেননা মহামারি পরিস্থিতির কারণে আমরা ওই এলাকায় প্ররিদর্শনে যেতে পারছি না।”
মালিকি অ্যাবোমি কালাভি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি বিজ্ঞান অনুষদের স্নাতক। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করা এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে কাজ করার তাঁর দশ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং ইতোমধ্যে তিনি শতাধিক কৃষি-উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তিনি পরামর্শক সংস্থা গৌভারনাইল-এর প্রতিষ্ঠাতা/পরিচালক, এটি প্রশিক্ষণ এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের একত্র বা সুসংহত করার ক্ষেত্রে একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে তাঁর পরামর্শক সংস্থাটিকে যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে সে-সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে মালিকি উল্লেখ করেন, “সমাবেশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করায় সামনা-সামনি প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হয়ে পড়ে। আমরা অনলাইনে বিনিময় করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমাদের বেশিরভাগ খদ্দেরের পক্ষে ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়া ব্যয়বহুল। তিনি স্বীকার করেন যে, বিশ্বাসের সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করার জন্য বিনামূল্যে কাউন্সিলিং পরিষেবাসমূহ অব্যাহত রেখে খদ্দেরদের সহায়াতা করা জরুরি।
আজীবন শিক্ষার্থী মালিকি নতুন নতুন জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে আগ্রহী। তাই প্রাথমিকভাবে তাঁর আশঙ্কা থাকা সত্তে¡ও নতুন অনলাইন কোর্স চালু করার মাধ্যমে তিনি কোভিড-১৯ সংকটকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখেছিলেন। নিজের পরিবারের সাথে আরো বেশি সময় কাটাতে পেরে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ বিস্তৃত করতে পেরে তিনি আনন্দিত। কোভিড-১৯ কারাবাসের সময় তাঁর চূড়ান্ত সুখের বিষয় হলো, অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি ফরাসী ভাষায় "সাফল্যের প্রথম পাঠ" শীর্ষক একটি বই লিখে শেষ করতে পেরেছেন।
ঝুঁকিতে আছে এমন জনগোষ্ঠী বিশেষত নারী ও তরুণদের সক্ষমতা বিকাশে সহায়তা কারার প্রতিশ্রুতি এবং এসব বিষয়ে অভিজ্ঞ হওয়ায় ২০১৯ সালে মালিকি অ্যাকসেস এগ্রিকালচার-এর একজন অ্যাম্বাসেডর নিযুক্ত হন। অ্যাকসেস এগ্রিকালচার বিশ্বব্যাপী পরিষেবা প্রদানকারী অলাভজনক একটি সংস্থা। সংস্থাটি দক্ষিণ গোলার্ধের জন্য আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ভাষায় মানসম্পন্ন ভিডিও-র মাধ্যমে কৃষকদের শেখার ক্ষেত্রে সহায়তা করে থাকে।
মালিকির লক্ষ্য হলো অ্যাকসেস এগ্রিকালচার প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কৃষক এবং গ্রামীণ ব্যবসায়ের জন্য কার্যকর কৃষি-প্রশিক্ষণের প্রচার করা। তিনি আশা করেন যে, সরকারগুলো যদি ইন্টারনেট পরিষেবায় ভর্তুকি দিতে সম্মত হয় তাহলে লোকেরা তার মতো অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের ভিডিওগুলো দেখার সুয়োগ পাবে এবং এ থেকে লাভবান হতে পারবে।