রোগ নিরাময় করা প্রয়োজন। এটি মানুষ, প্রাণী ও গাছপালা সবার জন্যই সত্য। গাছপালার সুরক্ষায় ছত্রাকনাশকগুলো কীটনাশকগুলোর তুলনায় সম্ভবত আরও সহজে গ্রহযোগ্য হিসেবে দেখা যায়, যেগুলো ইকোসিস্টেম, মানুষ, মৌমাছি ও পাখির জন্য ক্ষতিকারক হিসেবে সুপরিচিত।
তবে, কোনো প্রকার রাসায়নিক ছাড়াই গাছপালা রক্ষা করা যেতে পারে, যা ভারতের এমএস স্বামীনাথন ফাউন্ডেশন তাদের কৃষক-প্রশিক্ষণ ভিডিওগুলোতে দেখাচ্ছে।
চিনাবাদামের শিকড় ও কা- পচা বিষয়ে তাদের সবশেষ কৃষক-প্রশিক্ষণ ভিডিওটিতে সুন্দরভাবে দেখায় যে, ট্রাইকোডার্মার মতো উপকারী ছত্রাক কীভাবে রাসায়নিক ছত্রানাশক ছাড়াই চিনাবাদামের শিকড় ও কা- পচা রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
ভারতীয় কৃষক গোবিন্দমাল দর্শককে দেখান, কীভাবে তিনি চিনাবাদামের বীজগুলো ট্রাইকোডার্মার প্রলেপ দিয়ে ঢেকে দেন। কিছু পানি ব্যবহার করে পাউডারগুলো বীজের গায়ে লাগানো যায়। বীজগুলো যেন ভেঙে না যায়, সেই জন্য তিনি হাত দিয়ে না লাগিয়ে একটি চটের ব্যাগ ব্যবহার করে বীজের গায়ে ট্রাইকোডার্মা মিশিয়ে নেন।
কোনো কোনো কৃষক ট্রাইকোডার্মাকে সরাসরি মাটির সাথে মিশিয়ে সারে মিশিয়ে দেন। এক হেক্টর জমির জন্য তারা দুই কেজি ট্রাইকোডার্মা ১০ ঝুড়ি খামারের সারে মেশান। জমিতে প্রয়োগ করার আগে মিশ্রণটি একদিনের জন্য ছায়ায় রেখে দেন। ভালো ছত্রাক সারের মধ্যে দ্রুত বাড়ে। বীজ বপণের আগে তারা জমিতে মিশ্রণটি ছিটিয়ে দেন। ফলে কৃষকেরা প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যবান চিনাবাদাম উৎপাদন করবে।
জীবতাত্ত্বিক কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ দীর্ঘকাল ধরে পোকামাকড়ের মধ্যে সীমিত ছিল। তাই চিনাবাদামের মূল ও কা- পচা বিষয়ে গুগলে অনুসন্ধান করার সময় আমি এটি দেখে আনন্দিত ও অবাক হয়েছিলাম যে, ট্রাইকোডার্মার মতো উপকারি ছাত্রাকের সাহায্যে জীবতাত্ত্বিক নিয়ন্ত্রণের ওপর বেশ কিছু শীর্ষ প্রবন্ধ সেখানে রয়েছে। এই বিষয়ে গবেষণায় ভারতীয় বিজ্ঞানীরা সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন আর সে-জন্যই এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই যে, ভারতে ট্রাইকোডার্মা একটি বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে ব্যাপকভাবে পাওয়া যায়।
তাদের নিজস্ব ভিডিওগুলো ছাড়াও এমএসএসআরএফ-এর কর্মীরা বাংলাদেশ ও আফ্রিকায় তৈরি কৃষক-থেকে-কৃষক প্রশিক্ষণ ভিডিওগুলো অনুবাদ করেছেন। এমএসএসআরএফ গ্রামীণ উদ্ভিদ ক্লিনিক এবং কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে কৃষকদের কাছে ভিডিওগুলোর তামিল সংস্করণগুলো পৌঁছে দিচ্ছে।
আগের একটি ব্লগে জেফ লিখেছিলেন যে, “সম্প্রসারণ এজেন্টরা কৃষি-রাসায়নিক সম্পর্কে কৃষকদের মনোভাবে পরিবর্তন আনতে পারে, যদিও এটি সময়সাপেক্ষ।” এটি সত্য। তবে, ভিডিওগুলো এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে। এছাড়াও মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ ভিডিওগুলো কেবল কৃষকদেরই আচরণ নয়, এমনকি সম্প্রসারণকর্মী এবং কিছুসংখ্যক গবেষকদের আচরণেও পরিবর্তন আনতে পারে।
আশা করি ভবিষ্যতে, আমরা জৈব-কৃষির সমর্থনে আরও গবেষণা ও সম্প্রসারণ দেখতে পাব এবং কৃষকদের জন্য আরও জৈব-প্রযুক্তি সহজলভ্য হবে। আমরা যেমন অন্যান্য প্রযুক্তির সাথে দেখেছি, কৃষক-প্রশিক্ষণ ভিডিওগুলো সবুজ প্রযুক্তির জন্য একটি বাস্তবসম্মত চাহিদা তৈরি করতে পারে এবং সেগুলোতে গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের সূচনা (‘ট্রিগার’) করতে পারে।
চিনাবাদাম বিষয়ে অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের ভিডিওসমূহ
বাদামের আফলাটক্সিন ব্যবস্থাপনা