আমি আব্রাহান মুজিকার থেকে শিখেছি কীভাবে সস্তা কিছু উপাদান এবং সাধারণ কিছু সরঞ্জাম দিয়ে আপনার নিজের অণুজীবের কালচার (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) করতে পারেন। আব্রাহান আমাকে এবং আমাদের একটি ছোট্ট দলকে তার এগ্রোইকোলোজি কোর্সে দেখিয়েছেন, আপনি কিছু শুকনো পাতা (লিটার) সংগ্রহ করে শুরু করতে পারেন। আমরা কোচাবাম্বা শহরের দুই বা তিনটি মোল (Schinus mole) গাছের গোড়া থেকে গাছের শুকনো পাতা ও উপরের স্তরের মাটি (টপসয়েল) সংগ্রহ করেছি।
আমরা প্রায় ৫ কিলোগ্রাম শুকনো পাতা (লিটার) এবং কালো মাটি একটি প্লাস্টিকের টেবিলের উপরে রাখলাম। আমরা অণুজীবদের খাওয়ার জন্য এর সাথে ১ কিলোগ্রাম কাঁচা চিনি ও এক কিলোগ্রাম আমিষ-সমৃদ্ধ ধানের তুষ মেশালাম, এবং মিশ্রণটিকে কাই (পেস্ট) করবার জন্য প্রয়োজনীয় পানি মেশালাম। এটি এমন ভেজা হওয়া উচিত যাতে মিশ্রণটিকে হাতে নিয়ে দুই হাতের মাঝখানে রেখে চাপ দিলে কয়েক ফোঁটা জল বেরিয়ে আসে।
আমরা সব উপাদান একত্রে মেশানোর সাথে সাথে পউরুটির ইস্টের (ছত্রাকের) মতো একপ্রকার গন্ধে পুরো ঘর ভরে ওঠে।
‘ইস্টের গন্ধ!’ আব্রাহান বলেন, ‘ইস্ট হলো প্রথম অণুজীব যা চিনি মেশানোর প্রতিফল।’
আমি বললাম, ‘শুধু ইস্ট নয়, এতে ১০ হাজার প্রজাতির জীবাণু থাকতে পারে।’ আব্রাহান খুশি মনে একমত হলেন।
আমরা এই কাই দিয়ে ২০ লিটার একটি বালতির তিন ভাগের একভাগ ভরে দিয়েছি, এবং এর ভেতরে যেন বাতাস ঢুকতে না পারে সে জন্য প্লাস্টিকের একটি ব্যাগ দিয়ে ঢেকে রাবার দিয়ে টাইট করে বেঁধে দিয়েছি। আব্রাহান জোর দিয়ে বলেছিলেন, বাতাসের সংস্পর্শে এলে মিশ্রণটি পচে যাবে। গাজন হতে অক্সিজেন লাগে না।
একমাস পরে আব্রাহান ২০০ লিটার ব্যারেল জলে এই মিশ্রণটি মিশিয়ে দেবেন এবং এটিকে আরও একমাসের জন্য আবার আটকে (সিলমোহর করে) দেবেন। তারপর পানি নিষ্কাশন করবেন। কেননা, ততদিনে এই পানি অণুজীবে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে।
‘মাটির জীবন’। মাটিকে স্বাস্থ্যকর করার জন্য মিশ্রণটি ছিটিয়ে দেওয়া যেতে পারে, অথবা দ্রুত পচানোর জন্য কম্পোস্টে ব্যবহার করা যেতে পারে, বা সার হিসেবে গাছের পাতায় প্রয়োগ করা যেতে পারে। তিনি বলেন, এটি মূলত কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে মরে যাওয়া মাটির জীবন ফিরিয়ে আনের জন্য।
একটি ছোটো দোকানের দ্বিগুণ আব্রহানের বাড়িটিও, যেখানে তিনি কাঠকয়লা তৈরির সময় ‘লিকুয়িড স্মোক’ বিক্রি করেন। এই তরল-পদার্থ পানির সাথে মিশিয়ে প্রাকৃতিক পোকামাকড় ও ছাত্রাক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ফসলের গায়ে ছিটিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বিষাক্ত রাসায়নিক ছাড়া গাছপালা রক্ষা করার জন্য এই ধরনের অন্যান্য পণ্য তৈরি এবং বিক্রি করেন।
যদিও আব্রাহান যে-পণ্যগুলো বিক্রি করেন, সেগুলো নিজেই তৈরি করেন। তবে, তিনি অন্যদের শেখাতে পেরে খুবই আনন্দিত। তিনি প্রতিটি পণ্য কীভাবে তৈরি করেন, তার গোপনীয়তা এগ্রোইকোলজি কোর্সে অংশগ্রহণকারীদের শেখান।
কিছু লোক সবসময় থাকে, যারা এই চোলাইগুলো মেশাতে চান না। এবং যারা নিজের জন্য তৈরি করে তারাও বিষাক্ত কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে বিশ^কে একটি ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে পারেন, আব্রাহান যা ব্যাখ্যা করেছেন, তা কৃষক ও ভোক্তাদের জন্য একটি বিপদস্বরূপ।
অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের এই সম্পর্কিত অন্যান্য ভিডিওগুলো
মাটি ও গাছপালার জন্য ভালো জীবাণু