
পেরুতে দেশীয় আলু রক্ষা করার একটি উপায় হলো সেগুলো খাওয়া এবং বিক্রি করা। সম্প্রতি আমি জানতে পেরেছি যে, সেখানে কিছুসংখ্যক রেস্টুরেন্ট মালিক সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে আলু কেনেন।
পল, মার্সেলা এবং আমি স্থানীয় কৃষিবিদ রাউল কেন্টো’র সাথে হুয়ানকায়ো শহরের খাদ্য-নিরাপত্তা এবং স্থানীয় বাণিজ্য প্রসারের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা গুইডো ভিলেগাসের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। তিনি আমাদের বলেন যে, পেরুর সরকারের শিশুদের খাওয়ানোর একটি কর্মসূচি রয়েছে (কালিওয়ামরু : সবল শিশু) যেখানে জাতীয় সরকার খাদ্যসামগ্রী পাঠায়, যেগুলো সহজে পরিবহণ এবং সংরক্ষণ করা যায়।
হুয়ানকায়ো শহরের শিশুদের সকালের নাশতা ও দুপুরের খাবার তৈরি করার জন্য সরকারের পাঠানো খাদ্যের সাথে স্থানীয় তাজা খাবার ও শাকসবজি কেনা হয়, যার মধ্যে দেশি আলুও রয়েছে। জনাব গুইডো বলেন, “আমরা এই সরাসরি কেনাকাটায় অগ্রগামী ছিলাম।”
তিনি আরও বলেন যে, তারা জীববৈচিত্র্য, এগ্রোইকোলজি এবং পারিবারকি কৃষিতে সহায়তা করতে আগ্রহী। প্রতিবছর জাতীয় আলুদিবসে (৩০ মে) হুয়ানকায়ো শহরে একটি মেলা হয়, সেখানে স্থানীয় সরকার ক্ষুদ্র চাষিদের সাথে রেস্টুরেন্ট মালিকদের যোগাযোগ ঘটিয়ে দেয়।
তাই, আমরা হুয়ানকায়ো শহরের একটি পারিবারিক রেস্টুরেন্ট ‘এল কস্টিলার’-এ যাই এবং মালিক পার্সি ব্রানেজের সাথে পরিচিত হই। রেস্টুরেন্টটি ছিল দাগহীন, পরিচ্ছন্ন, ভালোভাবে আলোকিত এবং সেখানে মাত্র চারটি টেবিল ছিল, সেখানকার পরিবেশ দুপুরের খাবারের জন্য বেশ উপযুক্ত ছিল। পার্সি অনামন্ত্রিত চিত্রগ্রাহকদের (ফিল্ম ক্রু) দেখে আনন্দিত হয়েছিলেন বলেই মনে হলো, এবং তিনি টেবিল থেকে টেবিলে গিয়ে তাঁর গ্রাহকদের জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, তাঁরা খাওয়ার সময় আমরা চিত্রগ্রহণ করলে তারা কিছু মনে করবেন কি না। তিনি দেশীয় ঐতিহ্যবাহী খাবারের সাথে সিদ্ধ আলুও পরিবেশন করেছিলেন।
পার্সি জানান যে, তিনি তাঁর বাবার ঐতিহ্য অনুসরণ করে ২০ বছর ধরে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করছেন, ৫০ বছর আগে তাঁর বাবা এরকম একটি রেস্টুরেন্ট খুলে ব্যবসা শুরু করেন। গুইডো আমাদের যা বলেছিলেন তা নিশ্চিত করে পার্সি জানান যে, কীভাবে তিনি জাতীয় আলুদিবসে মেলায় গিয়ে দুই জন কৃষকের সাথে দেখা করেছিলেন। তিনি তাঁদের ফোন নাম্বার চেয়ে নিয়েছিলেন এবং এখন যখন তাঁর আলুর দরকার হয় তিনি তাঁদের একটি ফোন কল করেন এবং তাঁরা রেস্টুরেন্টের দরজায় পণ্যসামগ্রী নিয়ে আসেন।
পার্সি সপ্তাহে ১০০ কেজির একটু বেশি আলু কেনেন। কৃষকদের কাছে যে জাতের দেশি আলুই থাকুক না কেন, তিনি তা নিয়ে নেন। তিনি তাঁর স্থানীয় থিমযুক্ত (একটি নির্দিষ্ট বিষয় থাকে) রেস্টুরেন্টে নানা জাতের আলু দিয়ে তৈরি খাবার পরিবেশনা উপভোগ করেন বলে মনে হলো। কৃষকেদের শহরে আসতে কিছু অর্থ খরচ হয়, তবে তা খুব বেশি নয়, ছোটো ছোটো দেশীয় বাসের চালকেরা সাধারণত বোচকা হিসেবে একবস্তা আলু নিতে পারলে খুশি হয়।
দুই জন কৃষকের একটি তৈরি বাজার আছে। রেস্টুরেন্টটি নিশ্চিত সরবরাহ পায় এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের বাদ দিয়ে পাইকারের কাছ থেকে কৃষক যে মূল্য পেতেন তার চেয়ে বেশি পান এবং রেস্টুরেন্ট মালিক বাজার থেকে যে মূল্যে আলু কিনতেন তার চেয়ে কমে পান।
রেস্টুরেন্ট এবং অন্যান্য পারিবারিক সংস্থাগুলো পারিবারিক খামারগুলোর জন্য একটি প্রাকৃতিক বিক্রয় কেন্দ্র, যা নিকটবর্তী শহরগুলোতে তাজা স্থানীয় খাবার নিয়ে আসে। এবং স্থানীয় সরকারগুলো সম্ভাব্য গ্রাহকদের সাথে ক্ষুদ্র কৃষকদের যোগাযোগ রাখতে সহায়তা করতে পারে, তাহলে তারা একে অপরের সাথে সরাসরি ব্যবসা করতে পারবে।
রেস্টুরেন্টের মালিকদের যখন পণ্যের প্রয়োজন হবে তখন তারা ফোন কল করতে পারেন। এ ধরনের সরাসরি বিপণন ত্রিশ বছর আগে কল্পনাও করা যেত না, যখন ল্যাটিন আমেরিকায় কৃষকদের কাছে কোনো ফোনই ছিল না। তাদের পকেটে একটি হ্যান্ডসেট দিয়ে দিন।
এক্সেস এগ্রিকালচার সম্পর্কিত ভিডিও দেখুন