খাদ্যবর্জ্য প্লাস্টিক ও অন্যান্য অজৈব পদার্থের সাথে না মিশিয়ে সেগুলো দিয়ে প্রয়োজনীয় কম্পোস্ট তৈরি করা যায়, যেকথা আমার স্ত্রী কোচাবাম্বার সেপ্রা রেডিওর এক অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে বলেছিলেন। তাঁকে আলের্তা ভের্দে (গ্রিন এলার্ট) নামের একটি স্থানীয় এনজিও আমন্ত্রণ জানয়েছিল, সাথে আরও তিন জন আলোচক ছিলেন, তাদের মধ্যে দুজন ছিলেন কৃষিবিদ, যারা স্কুল ও পরিবারগুলোকে কম্পোস্ট তৈরিতে উৎসাহিত করেন এবং একজন ছিলেন ছাত্র, যিনি শহরের যে-সব পরিবারগুলো কম্পোস্ট তৈরি করে তাদের ওপর থিসিস লিখছেন।
প্রথম দু’জন আলোচক শহরবাসীদের উদ্বেগের বিষয়ে আলোচনা করেন। তারা জানান যে, কীভাবে মাছি, ইঁদুর ও দুর্গন্ধ এড়িয়ে কম্পোস্ট তৈরি করা যাবে। বাগান করার ম্যানুয়াল থেকে পুরনো ধারণা পুনরায় ব্যবহার করা হয়েছিল ; যেমন, বার্নইয়ার্ড সারের একটি স্তর যুক্ত করার বিষয়টি শহরে যারা পশু পালন করেন না, তাদের জন্য অবাস্তব ধারণা।
রেডিও-র আলোচনায় সকল আলোচকই একমত হয়েছেন যে, শহরের শতকরা ৭০ ভাগ আবর্জনা জৈব, যার মধ্যে রয়েছে কাগজ, বাগানের ছাটাই আর খাদ্যবর্জ্য, যেগুলো পচে কাদার মতো এবং দুর্গন্ধযুক্ত পদার্থে পরিণত হয় এবং ভাগাড়ে মাছিদের আকৃষ্ট করে। যদি জৈব আবর্জনাকে কম্পোস্টে পরিণত করা যায়, তাহলে কম উপদ্রব হবে এবং আবর্জনা সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনাও কম করতে হবে।
আলোচনার উপস্থাপক ছিলেন আর্নল্ড ব্রাউয়ার, এনা বলেন, তিনি কীভাবে কম্পোস্ট তৈরি করেন। তিনি বেতার শ্রোতাদের উদ্দেশে ব্যাখ্যা করে বলেন যে, কীভাবে আমরা একটি গর্ত তৈরি করি এবং রান্নাঘরের জৈববর্জ্য দিয়ে তা ভরাট করি। যখন গর্তটি ভরে যায় তখন আমরা এটি হাল্কা মাটি দিয়ে ঢেকে দিই এবং একবছরের জন্য ফেলে রাখি। আবর্তন নিশ্চিতভাবেই পচনের গতি বাড়ায়। কিন্তু কম্পোস্ট নেওয়ার আগে আরও অনেক কাজ আছে। আমাদের বাড়িতে আমরা তাড়াহুড়ো করি না। ভালোভাবে কম্পোস্ট হওয়ার জন্য আমরা একবছর অপেক্ষা করি।
“সুতরাং এটি আরামদায়ক কম্পোস্ট।” আর্নল্ড টিপ্পনি কাটেন। এনা একমত হলেন, কিন্তু তিনি ভবিষ্যতের জন্য একটি দৃশ্যপট বর্ণনা করেন। গ্রামাঞ্চলের কাছে শহরের ঋণ আছে। আমরা অনেক মূল্যবান জৈবপদার্থ নিয়ে আসি। যেমন, খাদ্যসামগ্রী, এবং আমরা এর অনেকটাই পচিয়ে ফেলি, অপরিশোধিত এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য, কিন্তু অজৈব আবর্জনার সাথে মিশিয়ে ফেলি, প্রধানত প্লাস্টিকের সাথে। যদিও বর্জ্য বাড়িতে কম্পোস্ট করা যেতে পারে, স্থানীয় সরকার এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
পৌর-সরকার সমস্ত জৈব আবর্জনা শহরের বাইরে নিয়ে যেতে পারে এবং সেগুলো দিয়ে শহরের কাছাকাছি ক্ষয় হয়ে যাওয়া বড়ো কোনো জমিতে কম্পোস্ট তৈরি করতে পারে। কিছু মাটি দিয়ে কম্পোস্ট ঢেকে রাখা যেতে পারে এবং জমি প্রস্তুত হলে সেখানে গাছ লাগানো যেতে পারে। জৈব-খামারগুলো এখনও এর থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে, এটি জৈবসারের ফলদায়ক ব্যবহার নিশ্চিত করবে।
অর্ধ-শুষ্ক কোচাবাম্বার জন্য এটি একটি সৃষ্টিশীল ও উপযুক্ত সমাধান ছিল। প্রতিটি শহর ও মহানগরে নিজস্ব স্থানীয়ভাবে উপযুক্ত উপায়ে আবর্জনা পুনর্ব্যবহারযোগ্য হবে। তবে, আমাদের অবশ্যই খাদ্যসামগ্রীর অপচয় বন্ধ করতে হবে। কমলার খোসা হোক বা বাসি সালাদ, রান্নাঘর ও বাগানের বর্জ্য একটি মূল্যবান সম্পদ, যা অবশ্যই জৈবসার হিসেবে পুনরায় ব্যবহৃত হওয়া উচিত।
একইভাবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ক্রমবর্ধমান হারে জৈব কম্পেস্ট তৈরি একটি টেকসই ব্যবসা হিসেবে দাঁড়াচ্ছে। ইউরোপের কয়েকটি পৌর-সরকার সবুজ বর্জ্য (যেমন, আঙিনা বা তৃণভূমি থেকে ছাটাই করা ঘাস বা গাছের পাতা) থেকে কম্পোস্ট তৈরি করছে এবং খাদ্যবর্জ্য জ¦ালিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। সামান্য ইচ্ছা এবং কল্পনাশক্তি কাজে লাগিয়ে গ্রীষ্মম-লীয় পৌরসভাগুলোও আবর্জনা পুনরায় ব্যবহার করার জন্য তাদের নিজস্ব স্থানীয়ভাবে উপযুক্ত উপায় খুঁজে বের করতে পারে।
এই সম্পর্কিত অন্যান্য ভিডিও
Converting chicken waste into fertilizer
Turning fish waste into fertilizer
© Copyright Agro-Insight