কেনিয়ার স্কুলগুলো সম্প্রতি মুখস্থ করার রীতি থেকে সরে এসে তার বদলে দক্ষতা, জ্ঞান ও মনোভাবের দিকে নজর দিচ্ছে। ‘দক্ষতাভিত্তিক এই পাঠ্যক্রম (সিবিসি)-’এ আইসিটি ও কৃষিবিদ্যার মতো নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ‘মাউন্টেন টপ এডুকেশনাল পাবলিশার্স’-র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লরেন্স এনজাগি ব্যাখ্যা করে বলেন যে, নতুন এই চ্যালেঞ্জটি উভয় বিষয়-কে একীভূত করার একটি উপায় খুঁজে বের করেছে। শেষপর্যন্ত তিনি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, এর জন্য অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের ভিডিওগুলোই সবচেয়ে ভালো উপায় হতে পারে।
২০২০ সালে ‘মাউন্টেন টপ’ ধাপে ধাপে শিশুদের আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করেছে। পাঠ্যপুস্তকটিতে বাগান করা, শিম, কুমড়ো, ছোটো প্রাণী পোষা, উদ্ভাবনী বাগান করা-সহ অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের প্রায় ২০টি ভিডিও-র ইউআরএলগুলো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ভিডিও-র বিষয় বাছাই করতে, ইউআরএল-এ টাইপ করতে এবং ভিডিওটি দেখতে শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের সহায়তা করে।
লরেন্স জানান, ‘শিক্ষার্থীরা ভিডিওগুলো ইংরেজি বা কিসোয়ালি ভাষায় দেখতে পারে।’ তিনি বলেন, “এটি দারুণ ছিল। কেননা, তারা ভিডিওগুলোতে আফ্রিকান লোকেদের কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়েছিল।”
কেনিয়ার নব্বই শতাংশ স্কুল জাতীয় বৈদ্যুতিক গ্রিডের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পেয়ে থাকে এবং এর মধ্যে ৭০ শতাংশ স্কুলে ওয়াই-ফাই সুবিধা রয়েছে, যার মধ্যে দরিদ্র ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলও রয়েছে। লরেন্স বলেন, “যারা ভিডিওগুলো ডাউনলোড করতে পারে তাদের জন্য সেগুলো দেখা ছিল একই সমান ব্যাপার।”
শিক্ষার্থীরা ভিডিও দেখেÑ যেমন, একটি সবজির বীজতলা তৈরি করা। পাঠ্যপুস্তকটিতে শিক্ষকদের জন্য নির্দেশিকা থাকে, যেখানে দেখানো হয়, শিশুদের একটি প্রকল্পে কীভাবে নেতৃত্ব দিতে হয়। শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের দলবদ্ধভাবে সংগঠিত করেন এবং শিশুরা স্কুলের বাগানে বীজতলা তৈরি করে এবং কেল (পাতাজাতীয় সবজি) রোপণ করে। কীভাবে কম্পোস্ট তৈরি করতে হয় শিশুরা তার ওপরও একটি ভিডিও দেখে। তারপর তারা কম্পোস্ট তৈরি করে এবং তাদের সবজি বাগানে সার দেয়।
প্রকল্পটি পুরো মেয়াদে চলে। শিশুরা নিজেদের উৎপাদিত কিছু সবজি নিজেরা খায়, অভিভাবকদিবসে গর্বিত শিক্ষার্থীরা তাদের সবজিগুলো বড়োদের দেখায়। বড়োদের কিছু সবজি কেনারও অনুমতি দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আরও একটি মূল্যবান বিষয় শেখে, আর তা হলো: খামারগুলো অর্থ উপার্জন করা যায়।
এটি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, কেনিয়ার সরকার এখন তরুণদের গ্রামাঞ্চলে বসবাসে উৎসাহিত করছে। শহরে আর চাকরি নেই। কেনিয়া খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশÑ এটি নিশ্চিত করতে তরুণ সমাজকে আত্মনিয়োগ করতে হবে এবং অন্যদের জন্য খাদ্যের সংস্থান করতে হবে।
কোভিড মহামারির কারণে কেনিয়ার স্কুলগুলো বন্ধ ছিল। তবে, তারা ২০২০ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে স্কুল খুলে দিয়েছিল। বন্ধের সময় কিছু স্কুলের শিক্ষার্থীরা পাঠ্যপুস্তক পড়ে, টিভি ও রেডিওতে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান দেখে ও শুনে এবং ইন্টারনেটের সাহায্যে তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। অবরুদ্ধ ওই দিনগুলোতে কেউ কেউ অ্যাকেসেস এগ্রিকালচারের ভিডিওগুলো দেখেছিল।
শিখন ভিডিওগুলো কৃষকদের পরবর্তী প্রজন্মকে চাষাবাদ সম্পর্কে ভালো মনোভাব তৈরি করতে কতটা সাহায্য করেছে তা বিচার করতে হয়ত তড়িঘড়ি করা হবে। ২০২১ সালের জুলাই মাসে যখন তারা পরীক্ষায় বসবে, তখন মাউন্টেন টপ ও শিক্ষকেরা ভিডিওগুলো দেখার ফল নির্ণয় করবেন। কিন্তু এতে অনেক ঝুঁকি আছে ; কেননা, কেনিয়ার ২৫ হাজার স্কুলের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির প্রতিটিতে ১২ লাখ করে শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে, লরেন্স খুবই আশাবাদী। তিনি বলেন, “আমরা শিশুদের নিজেদের জন্য খাদ্য উৎপাদন ও বিক্রি করার মতো যোগ্য করে গড়ে তুলছি।”
অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের এই সম্পর্কিত আরও কৃষি ভিডিও দেখুন
কিসোয়ালি ভাষায় অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের ভিডিওগুলো
কিসোয়ালি ভাষায় অ্যাকসেস এগ্রিকালচরের ১৩০টি ভিডিও রয়েছে। ভিডিওগুলো এখানে পাবেন
কেনিয়ার অন্যান্য ভাষায় আরও ভিডিও
কেনিয়ার অন্যান্য ভাষায় অ্যাকসেস এগ্রিকালচারের ভিডিও পাওয়া যায় : আতেসো, ধোলুও, কালেনজিন, কিয়েম্বু, কিকুয়ু, লুহিয়া ও সাম্বুরু।