

এমনকি আপাতদৃষ্টিতে সহজ কাজগুলো, যেমন কোমল কেঁচো লালন পালন অনেকভাবে করা যেতে পারে। তবে, যেভাবেই করা হোক না কেন, সবভাবেই কিছু মৌলিক নীতি অনুসরণ করতে হয়।
বাংলাদেশের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কীভাবে মাটির নিচে সিমেন্টের তৈরি রিং বসিয়ে কেঁচো পালন করা যায়। কেঁচোগুলো যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সেই জন্য রিংয়ের ভেতরের মেঝে প্লাস্টিক শিট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। কলাগাছের বাকল ছোটো ছোটো টুকরা করে তাতে কেঁচোগুলোকে খাবার দেওয়া হয় এবং রিংটিতে যাতে বৃষ্টির পানি ঢুকতে না পারে সেই জন্য রিংটি ঢেকে দেওয়া হয়। তবে, ভেতরে কিছু আর্দ্রতা ধরে রাখা হয়।
আমার দাদা তার পেছনের বারান্দায় প্রেস-বোর্ডের বাক্শে কেঁচো চাষ করতেন। তিনি খবরের কাগজের ফালিতে তাদের খবার দিতেন এবং কফির গুঁড়ো ব্যবহার করতেন। তাই আমি জানতাম যে, কেঁচো পালনের একাধিক উপায় আছে, কিন্তু বলিভিয়ার কোচাবাম্বাতে একটি কৃষিমেলায় দুটি ছোটো পারিবারিক সংস্থাকে দেখার আগ পর্যন্ত আমি বুঝতে পারিনি যে, কত উপায়ে কেঁচো পালন করা যায়। উভয় সংস্থাই কেঁচো পালন করে এবং বিক্রি করে, তারা যে হিউমাস তৈরি করে এবং এই প্রক্রিয়ায় সংগৃহীত অতিরিক্ত আর্দ্রতা সারে ব্যবহার করার জন্য পাতা বা মাটিতে প্রয়োগ করে।
বায়োডেল নামের কোম্পানিটি বিভিন্ন ধরনের পাত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। কেঁচোগুলো প্লাস্টিকের মধ্যে মারা গিয়েছিল, কিন্তু তারা অ্যালমুনিয়াম সিলিন্ডারের ভেতর বেড়ে উঠেছিল, তাদের ঠান্ডা রাখার জন্য একটি ধাতব ব্যারেলে ভেতরে ফোম দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়েছিল। ঢাকনাওয়ালা একটি ট্রেতে হিউমাস সংগ্রহ করা হয়, যখন কেঁচোদের ব্যারেলের ওপরের দিক থেকে খাবার দেওয়া হয় (বিশেষ করে গোবরের সার)।
দ্বিতীয় কোম্পানির উদ্ভাবনী ছিল ভিন্ন। তারা প্লাস্টিকে মোড়ানো সামান্য হেলানো কাঠের ট্রে ব্যবহার করে এবং তারা কেঁচোকে ভুট্টা গাছের অবশিষ্টাংশ, আধা-কম্পোস্ট গোবর সার এবং রান্নাঘরের বর্জ্য খাওয়ায়। কেঁচোদের পছন্দের খাবার আছে। কোম্পানির মালিক সিলভিও গুতেরেজ ও তাঁর স্ত্রী ব্যাখা করে বলেন, “কেঁচোরা সব ধরনের কিউকারবিট (স্কোয়াশের মতো) খেতে পছন্দ করে, কিন্তু টক কিছু নয়। তারা সাইট্রাস মোটেও পছন্দ করে না।” কেঁচোরা কাগজ খায় কিন্তু তারা ডিমের কার্টুন খেতে পছন্দ করে।
তাই আমাদের এখানে একটি বাংলাদেশি সিমেন্টের রিং, একটি বলিভিয়ান ব্যারেল এবং কাঠের এক সেট ট্রে আছে। অর্থাৎ কেঁচো পালনের অনেক উপায় আছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, আমার দাদা কেঁচো নাইট-ক্রলারস (রাতে হামাগুড়ি দেয় যে কীটপতঙ্গ) বলে ডাকতেন, তাদের শরীর থেকে নিসিক্ত মাইক্রো-অরগানিজম কম্পোস্টকে সমৃদ্ধ করে এবং মাটি স্থিতিশীল রাখতে ও উন্নত করতে সহযোগিতা করে।
এই সমস্ত কেঁচো ব্রুডার কিছু মূল নীতি মেনে চলে। কেঁচোগুলোকে ঠান্ডা রাখা হয়, পালিয়ে যেতে দেওয়া হয় না এবং স্থানীয়ভাবে পাওয়া যায় এমন জৈবপদার্থ খাওয়ানো হয় এবং কেঁচোদের অতিরিক্ত আর্দ্র বা শুষ্ক হতে দেওয়া হয় ন।
এগ্রিকালচারের সম্পর্কিত ভিডিওগুলো দেখেন
ভারমিওয়াশ : শস্যের এক জৈব টনিক
তরল এবং দানাদার অর্গানিক বায়োসার